যে সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংসদ সদস্য বা তাদের মনোনীত ব্যক্তি পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আছেন, সে সব পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয়েছে। আদালতের এ সংক্রান্ত আদেশ কার্যকর করে রোববার দেশের সকল শিক্ষাবোর্ড নোটিস জারি করেছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের আইন উপদেষ্টা মো. মিজানুর রহমান দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ইচ্ছা পোষণ করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব পালন এবং পরিচালনা পর্ষদের বিশেষ কমিটির বিধান অবৈধ। রায়ের কপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানে এডহক কমিটি গঠন করে নির্বাচন দিতে বলেছেন আদালত। একইসঙ্গে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধন করতে আইন সচিব, শিক্ষা সচিব ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দেয়া হয়।
আদালতের রায়ের আলোকে শিক্ষাবোর্ডগুলো ২১ আগস্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও পরিচালনা পর্ষদ প্রবিধানমালা-২০০৯ এর ৫নং ও ৫০ নং ধারা এবং এ দুটি ধারার অন্তর্ভুক্ত ৫টি উপধারা বাতিল করে নোটিস জারি করে। এই নোটিসের ফলেই বাতিল হলো সংশ্লিষ্ট গভর্নিং বডি ও বিশেষ কমিটি। শিক্ষাবোর্ডগুলো পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে একই সঙ্গে এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। এর অংশ হিসাবে এডহক কমিটি গঠনের জন্য সদস্যদের নামের তালিকা পাঠানোর জন্য অধ্যক্ষদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে যে সকল বিদ্যালয়ে প্রবিধানমালা ২০০৯ এর ৫০ ধারা অনুযায়ী বিশেষ ধরনের কমিটি রয়েছে, সে সব কমিটিও বাতিল করা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষকদেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে সভাপতি মনোনয়নের জন্য জীবন বৃত্তান্তসহ তিন ব্যক্তির নাম, একজন অভিভাবক প্রতিনিধির নাম (উপজেলা নির্বাহী অফিসার/জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত) এবং জেলা শিক্ষা অফিসার মনোনীত একজন শিক্ষক প্রতিনিধির নাম প্রেরণের জন্য। এ ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. মো আশফাকুস সালেহীন বলেন, আদালতের রায়ের আলোকেই এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক বিবেচনায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সভাপতি ও সদস্য নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থাটি সচেতন মহলে দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে আলোচিত-সমালোচিত ছিল। কারণ পরিচালনা পর্ষদের যাবতীয় কর্মকাণ্ড আবর্তিত হয় মূলত সভাপতিকে কেন্দ্র করে। সংসদ সদস্য বা তার মনোনীত ব্যক্তি সভাপতি হওয়ায় তাদের অনিয়মের প্রতিবাদ করার সাহস পায় না কেউ। সংসদ সদস্যরা এমন ব্যক্তিকেও সভাপতি হিসাবে মনোনীত করেন যার শিক্ষাগত যোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ।