ক্রীড়া প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহমুদা। বলতে গেলে ম্যাচের প্রায় পুরো সময়ই গোলপোস্ট আর ডি-বক্সের মধ্যে পায়চারি করেছেন।
এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাইপর্বের ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাংলাদেশ যে ৯০ মিনিট খেলেছে তাতে একবারও বল ধরতে তাড়াহুড়ো করতে হয়নি তাকে। সিঙ্গাপুরের মেয়েরা একবারও তাকে ব্যতিব্যস্ত করতে পারেনি। প্রতিবেদন রাইজিংবিডির।
অন্যদিকে সিঙ্গাপুরের নুর ইজ্জাতি ম্যাচের শুরুতেই ইনজুরি আক্রান্ত হয়ে মাঠ ছাড়েন। তার পরিবর্তে যিনি গোলপোস্টের নিচে দাঁড়িয়েছেন তাকে স্বস্তি দেয়নি বাংলাদেশের মেয়েরা। একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে রক্ষণভাগকে তো ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছেই পাশাপাশি গোলরক্ষককেও স্বস্তি দেয়নি। বাংলাদেশের মেয়েদের আক্রমণ সামলাতে সামলাতে তার ঘাম ছুটে যায়।
তবে একের পর এক আক্রমণ শানালেও সেই অনুপাতে প্রথমার্ধে গোল হয়নি বাংলাদেশের। ৩৯ মিনিটে অধিনায়ক কৃষ্ণা রানীর একমাত্র গোলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিশ্রামে যায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আরো চারটি গোল হয় বাংলাদেশের। তার একটি করেন কৃষ্ণা রানী, দুটি করেন অনুচিং মুগিনি। অপর গোলটি করেন জাহান মৌসুমী।
ফলে ইরানকে ৩-০ গোলের হারানোর পর সিঙ্গারপুরকে ৫-০ গোলে ধরাশায়ী করল বাংলাদেশের মেয়েরা।
সোমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচের ৮ মিনিটে নিশ্চিত গোলের সুযোগ মিস করেন বাংলাদেশের সানজিদা। স্বপ্নার বাড়িয়ে দেওয়া বল চলে যায় সিঙ্গাপুরের ডিবক্সের মধ্যে। বলের পিছু নেন সানজিতা। গোলরক্ষক এগিয়ে এসে ধরতে গিয়ে মিস করেন। কিন্তু ফাঁকা পোস্টে বল জড়াতে পারেননি সানজিদা। তার আলতো টোকা দেওয়া বল সাইড পোস্ট ঘেঁসে বাইরে চলে যায়।
১০ মিনিটের মাথায় সানজিদার ডান প্রান্ত থেকে বাড়িয়ে দেওয়া বল থেকে নিশ্চিত গোল মিস মার্জিয়া আর কৃষ্ণা রানী। তাদের দুজনের যেকেউ বলে মাথা লাগাতে পারলেই বল তার নিশানা ভেদ করত।
১৮ মিনিটে মৌসুমী আক্তার আরো একটি সুযোগ মিস করেন। তার নেওয়া শট বারে লেগে ফিরে আসে। এরপর
মার্জিয়ার ক্রস থেকে পাওয়া বলে কৃষ্ণা রানীর হেড নেন। কিন্তু বল বারের উপর দিয়ে চলে যায়। ২৫ মিনিটে আরো একটি সুযোগ মিস করেন সিরাত জাহান স্বপ্না।
২৮ মিনিটের মাথায় সানজিদার বাড়িয়ে দেওয়া বল আলতো টোকায় জালে জড়াতে ব্যর্থ হন কৃষ্ণা রানী। ৩৫ মিনিটে অবশ্য সপ্না গোল করলেও রেফারি সেটা বাতিল করে দেন। কিন্তু ৩৯ মিনিটে কৃষ্ণা রানীর অসাধারণ গোলটি বাতিল করার প্রশ্নই ওঠেনি। এ সময় ডান সাইড থেকে সানজিদা বল বাড়িয়ে দেন। কৃষ্ণা রানী উড়ে আসা বলে হেড নেন। বল বাম প্রান্ত দিয়ে জালে আশ্রয় নেয় (১-০)।
তার গোলে ভর করে ১-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিশ্রামে যায় মারুফুল হকের শিষ্যরা।
৪৭ মিনিটে মার্জিয়ার বাড়িয়ে দেওয়া বল ডি বক্সের মধ্যে ধরতে এগিয়ে আসেন সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষক। কিন্তু তিনি ধরতে পারেননি। বল পেয়ে যান বাংলাদেশের অধিনায়ক কৃষ্ণা রানী। তিনি আলতো করে বল জালে জড়িয়ে দেন (২-০)।
৮২ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামা অনুচিং মুগিনি গোল করে ব্যবধান ৩-০ করেন। আর ৮৫ মিনিটে মৌসুমী গোলের দেখা পেলে ব্যবধান হয় ৪-০।
খেলার অন্তিম মুহূর্তে অনুচিং মুগিনি তার জোড়া গোল পূর্ণ করলে সিঙ্গাপুরের বড় হারের ষোলোকলা পূর্ণ হয়। বাংলাদেশ জয় পায় ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে