হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত কক্সবাজার। এখানে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির এ যোগেও সৈকতে স্থাপন করা হয়নি ফ্রি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক। এ কারণে সমুদ্র স্নানের সাথে ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পর্যটকরা। আর এই ইন্টারনেট সুবিধা পেতে সমুদ্র সৈকত এলাকায় ফি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক স্থাপনের দাবি জানাচ্ছেন তরুণ প্রজন্ম।
তারা বলছেন,বিশ্ব জ্ঞান বিতরক অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলো ইন্টারনেট। সমুদ্র সৈকত এলাকায় ফ্রি ওয়াই-ফাই সংযোগ চালু করলে পর্যটকের সমাগম বাড়বে। এ ক্ষেত্রে কক্সবাজার এগিয়ে যাবে আরও এক ধাপ ।
জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়, তারকামানের হোটেলে ওয়াই-ফাই এর সুবিধা থাকলেও তা ব্যবহারে রয়েছে সীমাবদ্ধতা। এতে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের ও হোটেল-মোটেলে অবস্থানরতরা এ সুবিধা ভোট করতে পারলেও বঞ্চিত হচ্ছেন বাকিরা।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আবরার ফায়াস বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম শহর সহ কয়েকটি এলাকায় ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে। কিন্তু কক্সবাজারের মতো একটা প্রথম সারির শহর ও পর্যটন এলাকাতে ফ্রি ওয়াই-ফাই এর সুবিধা নেই। যা করা খুবই জরুরি এবং যুগোপযোগী হবে।
কক্সবাজার সিটি কলেজের শিক্ষার্থী ইনজামাম উল হক চৌধুরী বলেন, ইন্টারনেট ছাড়া জীবন অচল। কিন্তু জেলা শহর বা সৈকত এলাকায় কোনো প্রকার পাসওয়ার্ড ছাড়া ফ্রি ওয়াই-ফাই সুবিধার ব্যবস্থা না থাকায় পিছিয়ে পড়ছে জেলাবাসী। এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
কক্সবাজারে বেড়াতে আসা কৌশিক ইবনে জানান, ‘বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তাঘাট কিংবা চলাফেরায়ও মানুষ এখন ইন্টারনেট মুখি হয়ে পড়েছে। কক্সবাজারে বিভিন্ন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কিংবা সরকারি কার্যালয়ে ওয়াই-ফাই এর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু তা ফ্রি নয়। এ ব্যবহারে রয়েছে সীমাবদ্ধতা। পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয়।
শিক্ষার্থী সবুজ শীল বলেন, ‘ডিজিটালের এই যুগে বর্তমান সময়ে সাধারণ একটা রেস্টুরেন্টেও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধার্থে ওয়াই-ফাই সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। কিন্তু কক্সবাজারের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ শহরে এর কোন সুবিধা নেই। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইন্টারনেটমুখি হয়ে পড়েছে। আমাদেরকেও শিক্ষার প্রয়োজনে এবং বাধ্য হয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা দেখতে ইন্টারনেটের দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য এমবি/জিবি ক্রয় করে ইন্টারনেট ব্যবহার করা ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। তাই জেলার পর্যটন স্পটগুলোর পাশাপাশি শহর এলাকার ফ্রি ওয়াই-ফাই এর সংযোগ স্থাপন করলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্যও সুবিধা হয়।
শহরের নুর পাড়া এলাকার জাফর আলম বলেন, ‘পর্যটন খাত হিসেবে কক্সবাজার শহরে ফ্রি ওয়াই-ফাই সুবিধার ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি। এতে শহরের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীরা আরও একধাপ এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা শহরের ব্যবসাকে ত্বরান্বিত করবে।
এদিকে আইটি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘কক্সবাজার জেলা পর্যটন এলাকা হিসেবে ফ্রি ওয়াই-ফাই চাহিদা ব্যাপক। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ফ্রি ওয়াই-ফাই দেশব্যাপী ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। কক্সবাজারকে পর্যটকদের কাছে পরিচিত করে তোলার ক্ষেত্রে ফ্রি ওয়াই-ফাই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। ফ্রি ওয়াই-ফাই সংযোগ ব্যবস্থা গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে শিক্ষাক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করছেন তাঁরা।