দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সব সম্প্রদায়ের ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, এখন আমাদের প্রয়োজন অটুট ঐক্য। হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রীস্টানসহ সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে যে অধিকারের জন্য আমরা একাত্তরে যুদ্ধ করেছিলাম সেই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আরও প্রয়োজন আমাদের স্বাধীনতার অধিকার, আমাদের সার্বভৌমত্বে অধিকার, গণতন্ত্রের অধিকারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা।
শনিবার (২০ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জন্মাষ্টমী শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিজন কান্তি সরকার ও পরিচালনা করেন অমলেন্দু দাস অপু।
ফখরুল বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন্মাষ্টমীর দিনে চট্টগ্রামে যে বক্তব্যে রেখেছেন, আরেকটি বক্তব্যে সম্ভবত আপনারা মনে করতে পারেননি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী জন্মাষ্টমীর বক্তব্যে হিন্দু নেতাদের দোষারোপ করেছেন। তিনি বলেছেন- একটা কিছু ঘটলেই আপনারা ঝাঁপিয়ে পড়েন, এমন মনে হয় যে, আপনারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাই অত্যাচারিত হচ্ছেন। অর্থাৎ আপনাদের ওপর যখন আঘাত করা হয়, মন্দির বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হলে যখন প্রতিবাদ করেন, সেই প্রতিবাদটাকে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) মনে করছেন আপনারা ভুল করছেন, অন্যায় করছেন। বাড়িয়ে বলছেন, অতিরঞ্জিত করছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মন্দিরে আক্রমণ হয়েছে। শুধু হিন্দু নয় বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবার ওপর সমানভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সেই দেশে কখনই শান্তি আসবে না, যতক্ষণ কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ নিরাপদে থাকবে না।
‘আজ বাংলাদেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে এই অবস্থার সঙ্গে শ্রী কৃষ্ণের আর্বিভাবের সময়ের বহুলাংশে মিল আছে। একইভাবে আজকে মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ৬০০ বেশি নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে প্রায় হাজারের বেশি মানুষকে। তার স্বীকৃতি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার তিনি এসে নিজেই বলে গেছেন যে, এই দেশে গুম করা হচ্ছে, বিচারবর্হিভূত হত্যা চলছে।’
আওয়ামী লীগ আমাদের ভোটাধিকার ও বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য, একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করবার জন্য আজকে তারা সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে, ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্যে রাখেন- ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নিতাই রায় চৌধুরী, সুকোমল বড়ুয়া, সুব্রত চৌধুরী, সুশীল বড়ুয়া, জয়ন্ত কুমার কুন্ড, রামকৃষ্ণ মিশন পূর্নধানন্দ, ইসকন ঢাকা দ্বিজননি, বিশ্বনাথ সরকার, গৌরাঙ্গ দাস, পুরোহত বিজয় পান্ডে, স্বাধীন কুন্ড, সুকৃতি মন্ডল, মিলটন বৈদ্য, তরুণ দে, কামাখ্যা চন্দ্র দাস, দেবাশীষ রায় মধু, রমেশ দত্ত, বিশ্বনাথ সরকার, সুরঞ্জন ঘোষ প্রমুখ।
সূত্র : জাগোনিউজ