রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে পাওয়া প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ইসি। সিদ্ধান্তগুলো ‘সারসংক্ষেপ’ আকারে নিবন্ধিত ২৮টি দল, আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ শীর্ষ কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের পাঠানো হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, ইভিএম ব্যবহার নিয়ে দলগুলোর আপত্তি ও সমর্থন দুটোই রয়েছে। সার্বিক বিষয়ে এখনও স্থির কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি নির্বাচন কমিশন।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল স্বাক্ষরিত ‘ইসির সঙ্গে নিবন্ধিত দলগুলের সংলাপ থেকে প্রাপ্ত মতামত ও পরামর্শ এবং কমিশনের পর্যালোচনা ও মতামত’ শীর্ষক একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে— রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া মতামতগুলো কমিশন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিচার বিশ্লেষণ করে দেখেছে। রাজনীতিতে গণতন্ত্রের সুস্থ চর্চা প্রয়োজন বলে নির্বাচন কমিশনও অভিন্ন প্রত্যাশা পোষণ করে। এ অভিন্ন প্রত্যাশা বাস্তবায়নে ইসি, সরকার, জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক দলসহ সবার ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত প্রয়াস প্রয়োজন।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, ৩৯টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ইসির সংলাপে অংশ নেওয়া ২৮টি দলকে এ সারসংক্ষেপ পাঠানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছেও ইসির পর্যালোচনা ও মতামত পাঠানো হয়েছে।
সারসংক্ষেপে ভোটে অংশগ্রহণ, ইভিএম, আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচনকালীন সরকার— এ চারটি বিষয়ে ইসির অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে সবার কাছে।
ভোটে অংশগ্রহণ বিষয়ে বলা হয়েছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চাইলেও কোনো দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করতে পারে না এবং সে ধরনের কোনো প্রয়াস নেবে না ইসি। প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অসামরিক বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা অপ্রতুল হতে পারে। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনা মোতায়েনের প্রস্তাবটি যৌক্তিক মনে করে ইসি।
ইভিএম প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ইভিএম ব্যবহার নিয়ে দলগুলোর আপত্তি ও সমর্থন দুটোই রয়েছে। সার্বিক বিষয়ে এখনও স্থির কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি ইসি। রাজনৈতিক দল ছাড়াও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিচার বিশ্লেষণ করে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে ইসি ভিন্নভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের জানানো হবে।
নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে ইসি বলেছে, এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয় বলে মনে করে নির্বাচন কমিশন। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রয়োজনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্বাচনকালীন সরকারের সময়ে ইসির অধীনে ন্যস্ত করতে সংবিধানের আলোকে বিবেচিত হওয়া প্রয়োজন।
এছাড়া নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সংবিধান ও আইনে দেওয়া ক্ষমতা সততা, সাহসিকতার সঙ্গে প্রয়োগ করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে ইসি।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত নির্বাচন কমিশনের সংলাপে ২৮টি দল অংশ নেয়। দুটি দলকে সেপ্টেম্বরে সংলাপে অংশ নেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। বিএনপিসহ ৯টি দল দাওয়াত পেলেও সংলাপে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থেকেছে।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট