রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারে শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা-২০২২ উদযাপিত হয়েছে। যথাযথ ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপিত হয়।
অনুষ্ঠানসূচীর মধ্যে ছিলো- বিহার আলোকসজ্জা, প্রভাতফেরি সহকারে বুদ্ধপূজা দান,জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ, অষ্টাঙ্গ উপোসথশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, সদ্ধর্মালোচনা সভা, হাজার প্রদীপ প্রজ্জলন, দেশ ও বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত বুদ্ধোপাসনা প্রভৃতি। এছাড়াও, সন্ধ্যার আকাশে উড়ানো হয় বৈচিত্রময় ফানুস ও আতশবাজি।
সারাদিনের এই পুণ্যানুষ্ঠানে সভাপতির আসন অলংকৃত করেন ভারতীয় উপসংঘরাজ ভদন্ত ধর্মরত্ন মহাথের, উদ্বোধকের ধর্মদেশনা দান করেন ভদন্ত শীলপ্রিয় মহাথের, প্রধান আলোচকের ধর্মদেশনা দান করেন ভদন্ত ক্ষান্তিপঞঞা থের, আশীর্বাদকের আশীর্বাণী প্রদান করেন ভদন্ত সরণপ্রিয় থের, প্রধান ধর্মদেশকের ধর্মদেশনা দান করেন ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ থের।
এদিকে ধর্মদেশনাপর্ব সমাপ্তির পরপর সন্ধ্যায় হাজার প্রদীপ প্রজ্জলন করা হয়। গ্রামের সর্বস্তরের উপাসক-উপাসিকা বৃন্দ উক্ত প্রদীপ প্রজ্জলনে অংশগ্রহণ করেন।
হাজার প্রদীপ প্রজ্জলনের পরে সীমা মহাবিহার মাঠ থেকে আকাশ প্রদীপ তথা ফানুস উত্তোলন করা হয়। এসময় শত শত উৎসুক দর্শনার্থী বিপুল আনন্দ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উক্ত ফানুস উত্তোলন এবং বৈচিত্রতায় ভরপুর আতশবাতি উত্তোলন অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এসময় অনুষ্ঠানে যোগ দেন রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফা। ফানুস উত্তোলনে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, এটি বৌদ্ধধর্মীয় একটি ঐতিহ্য হলেও কালে এটি সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই ঐতিহ্যকে আমাদের লালন করতে হবে। অনুষ্টান যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করা যায় সেক্ষেত্রে আমাদের সকলের দায়-দায়িত্ব আছে।
এবছর রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারের সকল উপাসক-উপাসিকা তথা গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের যুব সমাজ শুভ প্রবারণা উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এদিন উপলক্ষে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান উদযাপনের পাশাপাশি যুব সমাজ একটি কল্পজাহাজ তৈরি করেন। শুভ প্রবারণার পরের দিন নিকটবর্তী বাঁকখালী নদীতে অনুষ্ঠিত কল্পজাহাজ ভাসানো উৎসবে গ্রামের যুব সমাজ উক্ত কল্পজাহাজ নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।
শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা ও ফানুস উত্তোলন – ২০২২ উদযাপন সম্পর্কে জানতে চাইলে আয়োজকবৃন্দের পক্ষ থেকে বলা হয় প্রতি বছর রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারে মহাসমারোহে শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করা হয়ে থাকে। এবছরও গ্রামের যুব সমাজ সেই ধারাবাহিকতাকে ধরে রাখার জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।