খালেদ শহীদ, রামু :
রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি-গর্জনিয়া সড়কে ৮ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরে রেজিস্টার্ড পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের লাইন পরিচালককে মারধর, জোরপূর্বক চাঁদা আদায় ও আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ করেছে ‘রামু উপজেলা সড়ক পরিবহন মোটর শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ওই পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। গতকাল শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সংগঠনের জরুরী সভায় এ ঘোষনা দেয়া হয়।
ধর্মঘট আহ্বানের কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘রামু উপজেলা সড়ক পরিবহন মোটর শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি আহসান উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।
গত ২১ নভেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ি স্টেশনে দায়িত্ব পালনকালে লাইন পরিচালক আবদুল জলিল ও মোজাফ্ফর আহমদকে ১৫/২০ জন ব্যক্তি সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা করে। এ ঘটনায় হামলাকারিরা লাইন পরিচালক আবদুল জলিল ও মোজাফ্ফর আহমদকে ব্যাপক মারধর করে গাড়ি স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আবছারের নির্দেশে, রামু উপজেলার রেজিস্টার্ড পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের লাইন পরিচালকদের উপর অতর্কিত এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানান, রামু উপজেলা সড়ক পরিবহন মোটর শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি আহসান উল্লাহ। তিনি বলেন, হামলাকারিরা নাইক্ষ্যংছড়ি স্টেশনে রামু উপজেলা অটোরিক্সা, টেম্পু, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যদের (শ্রমিক) জিম্মি করে, জোরপূর্বক চাঁদা আদায় শুরু করে। এ ঘটনার পর নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল আবছার সহ হামলায় জড়িতদের সাথে যোগাযোগ করে হামলার কারণ জানতে চাইলে, কোন সদুত্তর না দিয়ে উল্টো রামুর পরিবহন শ্রমিক নেতাদের হুমকি-ধমকি দেয়া হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ও হামলার প্রতিকার চেয়ে গত ২৩ নভেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন, রামু উপজেলা অটোরিক্সা, টেম্পু, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। ওই অভিযোগে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করলেও কোন সুষ্ঠু সমাধান দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন, পরিবহন শ্রমিক নেতারা। হামলাকারিরা ওই বৈঠকে রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিগত দুই ইউএনও ও ওসিসহ যৌথ বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক লিখিত চুক্তিপত্র না মানার ঘোষনা দেন। এ কারণে উভয় পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ আরো জটিল আকার ধারণ করে।
দুই লাইন পরিচালককে মারধর, দুই উপজেলার বিগত ইউএনও এবং ওসি’র সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়কে শ্রমিকদের কাছ থেকে সন্ত্রাসী কায়দায় চাঁদাবাজির অভিযোগে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। রামু উপজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা অটোরিক্সা, টেম্পু, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন রামু উপজেলার সভাপতি ছৈয়দ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, কার্যকরী সভাপতি মমতাজ মিয়া, সহ সভাপতি মুজিবুল হক, লাইন সম্পাদক হারুনর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ওবাইদুল হক, অর্থ সম্পাদক আলী হোছাইন, দপ্তর সম্পাদক মো. শফি, সদস্য শফিউল আলম প্রমূখ।
সভায় অবিলম্বে শ্রমিক ইউনিয়নের দুই লাইন পরিচালককে মারধরের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি এবং নাইক্ষ্যংছড়ি স্টেশনে রামু উপজেলা অটোরিক্সা, টেম্পু, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকদের জিম্মি করে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানানো হয়। এসব দাবি না মানলে আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি-গর্জনিয়া সড়কে অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘটের হুশিয়ারি দেন রামু উপজেলা সড়ক পরিবহন মোটর শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতারা।