একাত্তরের জয় বাংলা বাহিনী কক্সবাজার প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে গেছেন। মানুষের কল্যাণে কাজ করার শিক্ষা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর জীবন-আদর্শ জানতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার মহান চেতনা ধরে রাখতে হবে। গতকাল রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় বঙ্গবন্ধু উৎসব’ উদ্বোধনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
রামু স্টেডিয়ামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সাত দিনব্যাপী আয়োজনের বঙ্গবন্ধু উৎসব উদ্বোধন করা হয়। এ সময় ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ মঞ্চে সাংস্কৃতিক উপ-পরিষদের শিল্পীদের জাতীয় ও উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশনা করেন। অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২ জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১০২জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধু ভক্ত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন-ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ উপস্থাপন ও বাংলা বিজয়ের ৫১ বছর উপলক্ষে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কবীর। বঙ্গবন্ধু উৎসবের পৃষ্ঠপোষক ও সমন্বয়ক তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি শুভেচ্ছা বক্তৃতা ও উৎসবের সমন্বয়ক বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ‘বাফুফে’ সদস্য বিজন বড়ুয়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
বঙ্গবন্ধু উৎসবের মহাসচিব উপজেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক ও জেলা তাঁতীলীগের সহ-সভাপতি আনছারুল হক ভূট্টোর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন, বঙ্গবন্ধু উৎসব উদযাপন পরিষদের কো-চেয়ারম্যান কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামশুল আলম, জেলা আওয়ামীলীগ সাবেক মহিলা সম্পাদক মুসরাত জাহান মুন্নী, রামু ব্রাদার্স ইউনিয়নের সভাপতি মো. নবু আলম, মহাসচিব কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য ফরিদুল আলম, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো, এভারেস্ট টিচিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ রাজু বড়ুয়া, জেলা যুবলীগ নেতা পলক বড়ুয়া আপ্পু প্রমুখ।
রামুতে বঙ্গবন্ধু উৎসব’ উদ্বোধন উপলক্ষে রোববার দুপুর থেকে উৎসবমুখর হয়ে উঠে রামু স্টেডিয়াম। বিকালের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্কুলের শত শত শিক্ষার্থী ব্যানার নিয়ে উপস্থিতি এবং ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছা সেবকলীগ সহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী মিছিল-শ্লোগানে উৎসবস্থলে প্রবেশ করলে, রামু ষ্টেডিয়াম জনসমুদ্রের উৎসবে পরিণত হয়। উৎসবকে কেন্দ্র করে, বঙ্গবন্ধুর ছবি ও বঙ্গবন্ধু কথায় সাজানো হয়েছে মেলা প্রাঙ্গন। মেলা প্রাঙ্গনে নানান রকমের পণ্য সামগ্রী নিয়ে বেচাবিক্রিতেও যেন উৎসব শুরু করে ব্যবসায়ীরা। মেলা প্রাঙ্গনে নৌকায় দোলা, চরকি ঘোড়া, রেলগাড়ি ও নাগর দোলায় শিশু-কিশোররা চড়ে উৎসবে মেতে উঠে।
রাতে বঙ্গবন্ধু উৎসব মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, স্থানীয়শিল্পীরা। প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে এ মেলা। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ২৯ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রামুতে সাত দিনব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ অনুষ্ঠিত হবে।
রাতে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দলীয় পরিবেশনায় ছিল ‘রম্যভূমি রামু (ব্যন্ড-শো), চকরিয়ার সংগীত নিকেতন, কচ্ছপিয়া কিশোর কিশোরী ক্লাব ও কক্সবাজার সত্যেণ সেন শিল্পী গোষ্ঠী। একক কবিতা আবৃত্তিতে ছিলেন, আদিত্য সিকদার প্রিন্স, অতন্দ্রিলা বড়ুয়া রিয়া, দীপক বড়ুয়া, সুশান্ত পাল বাচ্চু। একক গানে ছিলেন, রাজস্বী বড়ুয়া, নাসির হাসান, মোবারক, মোক্তার আহমদ, চম্পক বড়ুয়া, তারেক হাসান, আথেংলা রাখাইন, সোহেল রানা, মো. জিয়া উদ্দীন, ফরমান উল্লাহ ও প্রিয়া দত্ত।