তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন- পাকিস্তান সৃষ্টির পর বঙ্গবন্ধু বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন বাঙ্গালী জাতির জন্য বড় বিপর্যয় আসবে। এজন্যই পাকিস্তানীদের অত্যাচারেরর নাগপাশ থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু আপোষ করলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তা না করে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশকে শত্রæমুক্ত করে বিশ্বে প্রথম জাতিরাষ্ট্র গঠন করেন। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন- ক্ষুূধা, দারিদ্রমুক্ত, সুখি-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। বঙ্গবন্ধু যখন দেশগড়ার এবং দেশকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়েছিলেন, তখনই কিছু বিপদগামী, ক্ষমতালোলী ও চক্রান্ত্রাকীদের হাতে শাহাদাৎ বরণ করেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশ বদলে যেত। ঠাঁই পেত উন্নত দেশের কাতারে।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০ টায় রামুর বঙ্গবন্ধু উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ একথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এমপির নেতৃত্বে রামু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাত দিনব্যাপী এ বঙ্গবন্ধু উৎসব।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন- এখন নির্বাচন সন্নিকটে। বিএনপি নেতারা সরকারের তৈরি সেতুর উপর উঠেও সরকারের উন্নয়ন হয়নি বলে সমালোচনা করেন। করোনার টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে বিএনপি, কিন্তু পরবর্তীতে মীর্জা ফকরুল সহ বিএনপি সকল নেতারা টিকা নিয়েছেন।
উন্নয়ন প্রসংগে মন্ত্রী বলেন- কক্সবাজার এখন আগের মতো নেই। এখানে রেল আসবে তা ছিলো স্বপ্ন। এখন তা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। কক্সবাজারে এত বড় বড় বিমান নামবে তা কেউ ভাবেনি। রামুতে ক্যান্টনমেন্ট, বিকেএসপি, সিএমএইচ, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল হবে তাও কেউ ভাবেনি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসুরী প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গ্রামীন জনপদের মানুষের স্বপ্ন পূরণে অবিস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। দেশের লাখো মানুষকে মুজিব বর্ষের ঘর উপহার দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিনত হচ্ছে। এখন খালি পা আর ছেঁড়া জামা পড়ার দৃশ্য দেখা যায় না, কুড়ে ঘরেও মানুষ থাকেনা। আগামী নির্বাচনে উন্নয়নের পক্ষে সবাইকে রায় দিতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন- ১৪ বছরে কক্সবাজার-রামুকে বদলে দিয়েছেন এমপি কমল। ১০ বছরে প্রতিবছর আমি এ উৎসবে এসেছি। শীতের রাতে এত মানুষের সমাগম আর কোথাও দেখিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন-ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ উপস্থাপন ও বাংলা বিজয়ের ৫১ বছর উপলক্ষে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু উৎসবের ষষ্ঠ দিনের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, বঙ্গবন্ধু উৎসব উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বাবুল শর্মা।
শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন, বঙ্গবন্ধু উৎসবের সমন্নয়ক সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি। বঙ্গবন্ধু উৎসবে পরিবেশ বন্যপ্রাণী ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড. নাছির উদ্দীনকে ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়।
বঙ্গবন্ধু উৎসবের মহাসচিব উপজেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক ও উপজেলা যুবলীগ সাধারণ নীতিশ বড়ুয়া সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এড. ফরিদুল আলম, কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামশুল আলম, কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য ফরিদুল আলম, কক্সবাজার জেলা জজ কোর্টের এডিশনাল পিপি এড. একরামুল হুদা, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান, খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ প্রমুখ।
সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মুস্তফা, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক মাহাবুবুল হক মুকুল, সাবেক মহিলা সম্পাদক মুসরাত জাহান মুন্নী, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল, কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. রেজাউর রহমান রেজা, ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান, রশিদনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমডি শাহ আলম, রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো।
সংগীত প্রযোজক বশিরুল ইসলামের পরিচালনায়, সংস্কৃতি কর্মী তাপস মল্লিকের সঞ্চালনায় রাত ৮টা থেকে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু উৎসবের ষষ্ঠ দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দলীয় পরিবেশনায় ছিল, সরগমালয় সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রত্যাশা শিল্পী গোষ্ঠী, রামুর রায়মোহন সংগীতালয় ও কক্সবাজার স্মল আর্ট স্কুলের নাটক । একক গানে ছিলেন, শিউলী দে, আদিত্য মল্লিক পঞ্চম, পলি বড়ুয়া, রেজাউল আমিন মোর্শেদ, রাহুল, কামাল উদ্দিন, ইস্কান্দার মির্জা, আন্না পাল, পলক বড়ুয়া আপ্পু, জাকিয়া সোলতানা মেরী।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যন্ত্রানুসঙ্গে ছিলেন, লিড গিটারে এইচ বি পান্থ, বেস গিটারে মমি, অক্টোপ্যাডে সজল দে, কীবোর্ডে সৈকত নন্দী, তবলায় রাজিব বড়ুয়া। আজ শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) শেষ হবে ‘বঙ্গবন্ধু তোমার জন্ম হয়েছিল বলেই আমরা পেয়েছি বাংলাদেশ’ স্লোগানে রামু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সাত দিনব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’।