২০২৩ সালে হজে যেতে নিবন্ধনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর সরকারি এবং বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধনের অর্থ জমাদান চলবে ৮-২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের সর্বশেষ ক্রমিক ৪২ হাজার ২৯৩ পর্যন্ত এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭ লাখ ৮ হাজার ৩৬৪ পর্যন্ত।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের শর্তাবলী—
> নিবন্ধনের জন্য হজযাত্রীর পাসপোর্টের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হবে।
> নিবন্ধনের পর হজে যেতে না পারলে ইতোমধ্যে ব্যয়িত অর্থ ব্যতীত অবশিষ্ট অর্থ ফেরত যোগ্য হবে।
> হজের খরচ কোনো কারণে বৃদ্ধি পেলে তা প্যাকেজ মূল্য হিসেবে গণ্য হবে এবং হজযাত্রীকে পরিশোধ করতে হবে। কোনো অর্থ উদ্বৃত্ত থাকলে তা হজযাত্রীকে ফেরত দেওয়া হবে।
> হজযাত্রীরা মাহরামসহ একইসঙ্গে পৃথকভাবে হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন ফরম পূরণ করে (ইউডিসি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ডিসি অফিস এবং হজ অফিস, আশকোনা, ঢাকার মাধ্যমে) নিবন্ধন ভাউচার তৈরি করতে পারবেন।
> সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের ভিসার জন্য নিবন্ধনের তিন দিনের মধ্যে পাসপোর্ট ও কোভিড ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট নিজ দায়িত্বে হজ অফিস, আশকোনা, ঢাকায় জমা দিতে হবে।
> হজ ফ্লাইট ঢাকা-জেদ্দা, ঢাকা-মদিনা, জেদ্দা-ঢাকা ও মদিনা-ঢাকা রুটের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটে হজে গমন ও প্রত্যাগমন করতে হবে। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকেও গমনাগমন করা যাবে।
> শূন্য কোটা পূরণের জন্য প্রাক-নিবন্ধিতদের মধ্য থেকে প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমানুসারে নিবন্ধনের আহ্বান করা হবে।
> নিবন্ধন সংক্রান্ত নিয়মের কোনো পরিবর্তন হলে তা যথাসময়ে বিজ্ঞপ্তি/এসএমএসের মাধ্যমে অবহিত করা হবে।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রদেয় টাকার পরিমাণ—
> প্রাক-নিবন্ধনকালে গৃহীত ৩০ হাজার টাকার মধ্যে ১ হাজার টাকা প্রসেস ফি কাটার পর অবশিষ্ট ২৯ হাজার টাকা সমন্বয় করে হজযাত্রীকে অবশিষ্ট ৬ লাখ ৫৪ হাজার ১৫ টাকা সোনালী ব্যাংক লি. স্থানীয় কার্যালয় শাখা, মতিঝিল, ঢাকার হিসাব নং ০০০২৬৩৩০০০৯০৮ এ নিবন্ধন ভাউচারের মাধ্যমে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে জমা প্রদান করে হজযাত্রী নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করবেন।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী নিবন্ধনের শর্তাবলী—
> এজেন্সিগুলো সরকারি ব্যবস্থাপনার হজ প্যাকেজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে এবং হজযাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে। এজেন্সি কর্তৃক ঘোষিত হজ প্যাকেজ www.hajj.gov.bd, www.haabbd.com এবং এজেন্সির নিজস্ব ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে এবং এর কপি হজ-১ শাখায় প্রেরণ করতে হবে।
> হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২২ এর বিধি ১১ (২) অনুযায়ী এজেন্সিকে হজযাত্রীর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন এবং ব্যাংকের মাধ্যমে সব লেনদেন করতে হবে।
> প্রসেস ফি বাবদ ১ হাজার টাকা, জমজম পানি বাবদ ৪২৫.৮৫ টাকা, মক্কায় ১ শতাংশ বাড়ি ভাড়া বাবদ ২ হাজার ২৪.২০ টাকা, স্থানীয় সার্ভিস চার্জ বাবদ ৮০০ টাকা, আপদকালীন ফান্ড বাবদ ২০০ টাকা, প্রশিক্ষণ ফি বাবদ ৩০০ টাকাসহ মোট ৪ হাজার ৭৫০.০৫ ঢাকা প্রাক-নিবন্ধনকালে গৃহীত ৩০ হাজার ৭৫২ টাকা থেকে কাটার পর অবশিষ্ট ২৬ হাহার ১.৯৫ টাকা সমন্বয়যোগ্য।
জেদ্দা-মক্কা-মদিনা ও মাশায়ের আল-হারামের পরিবহন ফি ৩৫ হাজার ১৬২.৪৩ টাকা এবং বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকাসহ মোট ২ লাখ ৩২ হাজার ৯৫৯.৪৩ টাকা। তার মধ্যে সমন্বয়যোগ্য ২৬ হাজার ১.৯৫ টাকা বাদে অবশিষ্ট ২ লাখ ৬ হাজার ৯৫৮ টাকা নিবন্ধনকারী হজ এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আগামী ২৮ মার্চ ২০২৩ তারিখের মধ্যে জমা দিতে হবে।
> হজের পাঁচ দিন মিনা-আরাফাহ ও মুজদালিফায় মোয়াল্লেম কর্তৃক প্রদত্ত সেবার ভিত্তিতে ৪ ক্যাটাগরির তাঁবু থাকবে (ক্যাটাগরি এ, বি, সি, ডি)। এজেন্সি যে ক্যাটাগরির তাঁবু গ্রহণ করবে অর্থাৎ ‘ডি’ ক্যাটাগরি এর জন্য ১ লাখ ৩৬ হাজার ১৩০.০৫ টাকা; ‘সি’ এর জন্য ১ লাখ ৬০ হাজার ৬৩০.৬২ টাকা; ‘বি’ এর জন্য ২ লাখ ২৪ হাজার ৬২১.৬৮ টাকা; এবং ‘এ’ এর জন্য ২ লাখ ৯০ হাজার ৯৩০.৭৮ টাকা সার্ভিস চার্জ হজযাত্রীর কাছ থেকে আদায় করতে পারবে।
> হজযাত্রীর কাছ থেকে প্যাকেজে ঘোষিত অর্থ প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট এজেন্সি হজযাত্রীকে পিলগ্রিম আইডি প্রদান করবেন।
> হজ চুক্তি অনুযায়ী হজ এজেন্সির ন্যূনতম ১৭ জন নিবন্ধিত হজযাত্রী না থাকলে হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২২ এর বিধি ২৬ অনুসারে লিড এজেন্সি নির্ধারণ করতে হবে। অতঃপর সমঝোতাকারী এজেন্সিকে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের অনলাইনে লিড এজেন্সির অনুকূলে স্থানান্তরসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে হবে। স্থানান্তরিত হজযাত্রীদের সব দায়-দায়িত্ব লিড এজেন্সি (নিবন্ধনকারী) গ্রহণ করবে। মোনাজ্জেম লিড এজেন্সি থেকে নিয়োগ হবে। প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে/অভিযুক্ত হওয়ার কারণে কোনো এজেন্সি হজযাত্রী প্রেরণে যোগ্য না হলে ওই এজেন্সি বিধিমালায় বর্ণিত পদ্ধতিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তার এজেন্সির হজযাত্রীর স্থানান্তর কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।
> হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২২ এর বিধি ১১ (২) অনুযায়ী হজ এজেন্সি হজযাত্রীর সঙ্গে পরস্পর চুক্তি সম্পাদন করবে। চুক্তিপত্রে হজযাত্রীকে প্রদত্ত সুবিধার কথা উল্লেখ করতে হবে। চুক্তির কপি হজযাত্রীকে এবং হজ অফিস, ঢাকা বরাবর প্রেরণ করবে।
> হজযাত্রী চুক্তিবদ্ধ এজেন্সির হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ‘ব্যাংক হিসাব’ এর মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন করবেন। আর্থিক লেনদেন করার পূর্বে হজ এজেন্সি ২০২৩ সালে হজযাত্রী প্রেরণের জন্য ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত কি না তা www.hajj.gov.bd ওয়েব সাইট থেকে জেনে নেবেন।
> হজযাত্রী হজে গমনকালে কোনো পচনশীল খাদ্যদ্রব্য তামাক পান-সুপারি, জর্দা অর্থাৎ নেশা জাতীয় দ্রব্য বহন করতে পারবেন না।
> নিয়মিত সেবন করতে হয় এমন ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী (ব্লাড সুগার টেস্টের স্টিপ নিডিল, ইনসুলিন, ডায়াবেটিক ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ) অবশ্যই (কমপক্ষে ৪৫ দিনের জন্য) সঙ্গে নিতে হবে। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রসহ এরকম ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী বহন করতে হবে।
> হজযাত্রী সরাসরি হজ এজেন্সি থেকে বিমানের টিকিট সংগ্রহ করবেন। প্যাকেজে উল্লেখিত মূল্যের অতিরিক্ত মূল্য গ্রহণ করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে অবহিত হতে হবে। ২০২৩ সালের হজ কার্যক্রম পরিচালনায় যোগ্য হজ এজেন্সির তালিকা www.hajj.gov.bd তে প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকাভুক্ত এজেন্সি এককভাবে/লিড এজেন্সির মাধ্যমে নিবন্ধনকার্য সম্পন্ন এবং সৌদি আরবে হজযাত্রী প্রেরণ করতে পারবে।
> সৌদি আরবে এজেন্সিভিত্তিক হজযাত্রীর তথ্য প্রেরণের পর মৃত্যু বা গুরুতর অসুস্থতার কারণে হজে যেতে অপারগ ব্যক্তিদের প্রতিস্থাপন কার্যক্রম শুরু হবে। হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২২ এর বিধি ১৩ অনুসারে প্রতিস্থাপন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। এক্ষেত্রে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদনের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাবে। এজেন্সি সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ হজযাত্রী প্রতিস্থাপন করার সুযোগ পাবে।
> হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংক হজ এজেন্সিকে কোনোভাবেই হজ নিবন্ধন কাজে লোন প্রদান করবে না।
সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য অনুসরণীয়—
> প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমানুসারে নিবন্ধনের জন্য আহ্বান (কল) পাওয়া সত্ত্বেও যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করবেন না তারা ২০২৩ সালের হজে গমনে আগ্রহী নন বলে বিবেচিত হবেন।
> মক্কা ও মদিনায় হুইল চেয়ার ব্যবহারের প্রয়োজন হলে কাউন্সেলর (হজ)/সহকারী মৌসুমী হজ অফিসারের কাছে ৩০০ সৌদি রিয়াল জামানত হিসেবে জমা রেখে হুইল চেয়ার সংগ্রহ করা যাবে। হইল চেয়ার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহারের পর হইল চেয়ার ফেরত প্রদানকালে জামানত হিসেবে প্রদত্ত ৩০০ সৌদি রিয়াল ফেরত প্রদান করা হবে। মিনা, আরাফাহ ও মুযদালিফায় হইল চেয়ার ও সাহায্যকারী প্রয়োজন হলে মোয়াল্লেম অফিসে অফেরৎযোগ্য ৩৫০০ সৌদি রিয়াল জমাপূর্বক সেবা গ্রহণ করা যাবে।
> হজযাত্রীকে আনুমানিক ১ হাজার সৌদি রিয়াল কুরবানি বাবদ সঙ্গে নিতে হবে।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট