উনিশ শতকের শুরুতে দিগদর্শন, বেঙ্গল গেজেট, সমাচার দর্পণের মাধ্যমে উপমহাদেশে সংবাদমাধ্যমের যাত্রা শুরু। ‘রঙ্গপুর বার্তাবহ’ দিয়ে সংবাদপত্রের যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশে। সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা এ দেশের মানুষের চিন্তা ও মননে পরিবর্তন এবং সমাজের অগ্রগতিতে যুগে যুগে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
সময়ের পরিবর্তনে এবং প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় গণমাধ্যমের বিকাশ ও সাংবাদিকতার ধরন প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশও পরিবর্তনের এ ধারায় পিছিয়ে নেই। ঢাকা পোস্ট বাংলাদেশের সংবাদ জগতে পরিবর্তনের ধারায় ‘অগ্রপথিক’ হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।
একসময় হাতে লেখা হতো রিপোর্ট। তারপর টাইপরাইটার থেকে কম্পিউটার, কম্পিউটার থেকে মোবাইল ফোন- গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার বিবর্তন ঘটেছে বহু ধাপে। ইন্টারনেট ও ডিজিটাল প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বর্তমানে গুরুত্ব বেড়েছে অনলাইন গণমাধ্যমের। বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় সংবাদপত্রগুলোও ডিজিটাল পোর্টাল ও অ্যাপের মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশন করছে। আগে একজন পাঠককে সর্বশেষ সংবাদ জানার জন্য দৈনিক পত্রিকায় চোখ রাখতে হতো। অর্থাৎ কোনো ঘটনা এক দিন পর জানত পাঠক। এখন প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে ইলেকট্রনিক মিডিয়া ‘দিন’কে ঘণ্টায় রূপান্তর করেছে, ‘ঘণ্টা’কে সেকেন্ডে রূপ দিয়েছে। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের খবর এখন জানা যায় ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সেই যুগোপযোগী ও তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনের পথিকৃৎ হিসেবে হাজির হয়েছে ঢাকা পোস্ট। এটি কেবল নিজে তথ্যবহুল ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করছে না, দেশের অন্য গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের বিকাশেও পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রতিদিন নানা খবর পাঠক-দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করে সব গণমাধ্যম। তবে হাতে গোনা কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরই পাঠক-দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়। সেখানে ঢাকা পোস্টের ঝুলি বেশ সমৃদ্ধ। অসংখ্য মুদ্রিত পত্রিকা, টেলিভিশন ও নিউজ পোর্টালের ভিড়ে ঢাকা পোস্টের এই ‘হাতে গোনা’ কয়েকটি গণমাধ্যমের একটি হয়ে ওঠা দারুণ প্রেরণার।
বড় স্বপ্ন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের যাত্রা শুরু হলেও গ্রহণযোগ্যতার শীর্ষে যেতে পেরেছে কটি? আবার শীর্ষস্থান দখলের চেয়েও ঢের কঠিন পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করা। সেই কঠিন পথ পাড়ি দিতে কাঠখড় পোড়াতে হয়, সময় ও শ্রম দিতে হয় নিবেদিতপ্রাণে। ঢাকা পোস্ট যাত্রার শুরু থেকে সেই কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে এগিয়ে চলেছে দৃপ্ত শপথে। মাত্র দুই বছরেই দেশের শীর্ষ এবং আস্থাভাজন অনলাইন গণমাধ্যম হয়ে ওঠার স্বীকৃতি পেয়েছে ঢাকা পোস্ট।
‘সত্যের সাথে সন্ধি’— এ স্লোগানকে ধারণ করে করোনা অতিমারির মতো বিরুদ্ধ পরিবেশের মধ্যে ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে ঢাকা পোস্ট জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ঢাকা পোস্টের দুরন্ত যাত্রার শুভ উদ্বোধন করেন। আজ ঢাকা পোস্টের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি।
দায়িত্বশীলতা, পরিকল্পনা, উদ্যম আর নিত্য-নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে চলেছে ঢাকা পোস্ট। প্রতিষ্ঠানটির মূল চালিকা শক্তি এর তরুণ ও উদ্যমী সংবাদকর্মীরা। সবার আগে, সর্বশেষ সংবাদ ও সত্য ঘটনা তুলে আনতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা। বিদায়ী বছরে (২০২২ সাল) ঢাকা পোস্টের ঝুলিতে জমা হওয়া বহু পুরস্কার এর সামান্য স্বীকৃতিই দেয়। তবে তাদের বড় স্বীকৃতি হলো পাঠকের মনে জায়গা করে নেওয়া। ঢাকা পোস্ট এখন বাংলাদেশের ঘরে ঘরে ডিজিটাল মাধ্যমে দ্রুত সংবাদ পাওয়ার বড় ও বিশ্বস্ত পোর্টাল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।
দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তরুণ প্রজন্মের সামনে যথাযথভাবে তুলে ধরার পাশাপাশি দেশ ও জনগণের কল্যাণে খবর পরিবেশনের ব্রত নিয়ে এগিয়ে চলছে ঢাকা পোস্ট। উৎকর্ষতা ও অগ্রগতির জন্য মাত্র দুটি বছর খুব বেশি সময় নয়। তবুও এটি অন্তত বলা যায়, যাত্রা শুরুর পর থেকে সবার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় প্রতিদিন নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে ঢাকা পোস্ট।
আস্থা অর্জন করে সরকারি নিবন্ধন পেয়েছে ঢাকা পোস্ট
গত বছরের ১৪ জুলাই সরকারিভাবে অনলাইন গণমাধ্যম হিসেবে নিবন্ধনের অনুমতি পায় ঢাকা পোস্ট। সরকারি বিধি-বিধান অনুসরণ করে পরে নিবন্ধন সনদও পায় প্রতিশ্রুতিশীল গণমাধ্যমটি। ২৪ জুলাই দুপুরে সচিবালয়ে ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকারের হাতে নিবন্ধন সনদ হস্তান্তর করেন তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া।
দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে ঢাকা পোস্টের অর্জন
আনুষ্ঠানিক যাত্রার ছয় মাসের মধ্যেই চমক দেখাতে শুরু করে ঢাকা পোস্ট। দুর্নীতি ও জনভোগান্তিসহ নানা খবরের পেছনের খবর তুলে ধরে জনপ্রিয়তার চূড়ায় পৌঁছায় গণমাধ্যমটি। গত দুই বছরে ঢাকা পোস্টের সাফল্যের মুকুটে যুক্ত হয়েছে একের পর এক পালক, সম্মান ও স্বীকৃতি। অর্জনের মাত্রা সমৃদ্ধ করেছে মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড, বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড, ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ সেরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বর্ষসেরা রিপোর্টিংসহ নানা পুরস্কার।
শিশুর অধিকার ও শিশু বাজেট নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য গত বছরের ৪ আগস্ট সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পুরস্কার পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জসীম উদ্দীন। ধানমন্ডির নিজস্ব ভবনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান পুরস্কার তুলে দেন। ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত ‘উপেক্ষিত শিশুরা : প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বাজেটে নেই প্রতিফলন’ প্রতিবেদনটি শ্রেষ্ঠ প্রতিবেদন হিসেবে মনোনীত করে সিপিডি।
পর্যটন বিষয়ে মানসম্মত প্রতিবেদন তৈরি এবং পর্যটনের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে ঢাকা পোস্ট এবং পোর্টালটির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আদনান রহমানকে সম্মাননা দেয় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।
একই বছর অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় ‘বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ অর্জন করেন ঢাকা পোস্টের প্রধান প্রতিবেদক আদনান রহমান। নারী ও শিশু (অনলাইন) ক্যাটাগরিতে ‘স্বপ্নের দুবাইয়ে দুঃস্বপ্নের রাত পার করছেন বাংলাদেশি তরুণীরা’ এবং ‘দুবাইয়ে বাংলাদেশি তরুণীদের পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করছেন যারা’ শিরোনামে অনুসন্ধানমূলক দুটি এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনের জন্য সেরার পুরস্কার পান তিনি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২২ পান ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আবু সালেহ সায়াদাত। ১ নভেম্বর ডিআরইউর নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আবু সালেহ সায়াদাত অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল নিয়ে ‘পুলিশ-কাউন্সিলরের সৃজনশীল চাঁদাবাজি, ‘ম’ তে মাসিক?’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছিলেন।
শিশু অধিকার নিয়ে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক তানভীরুল ইসলাম। শিশুদের ওপর করোনাভাইরাসের প্রভাব ক্যাটাগরিতে- ‘অটো পাস’ ‘কোভিড ব্যাচ’ বলে শিশুর ক্ষতি করছেন না তো?’’ শীর্ষক প্রতিবেদন তৈরির জন্য এই পুরস্কার পান তিনি। এছাড়া শিশুদের অধিকার রক্ষায় প্রতিবেদন তৈরির জন্য দুই ক্যাটাগরিতে মীনা অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জসীম উদ্দীন ও বিশেষ ক্যাটাগরিতে আদনান রহমান।
গত বছরের ১৫ জুন ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত ‘দুই সন্তানেই ‘ফুলস্টপ’ দিচ্ছেন ৭৯ শতাংশ মা’ শীর্ষক প্রতিবেদনের জন্য পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ‘মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ পান নিজস্ব প্রতিবেদক তানভীরুল ইসলাম।
কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি (সিসিএস) ভোক্তা অধিকার সাংবাদিকতা পুরস্কার পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শফিকুল ইসলাম। গত বছরের ২৪ মার্চ শফিকুল ইসলামের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
একই বছর তিনি ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কর্তৃক সেরা প্রতিবেদকের পুরস্কার অর্জন করেন। ১৩ ডিসেম্বর তার হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননার চেক তুলে দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
ম্যাক্স বিএসপিএ জার্নালিস্ট অ্যাওয়ার্ডে ঢাকা পোস্টের সিনিয়র স্পোর্টস রিপোর্টার আরাফাত জোবায়ের তিনটি পুরস্কার অর্জন করেন।
গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর পুরস্কার তুলে দেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। আরাফাত জোবায়ের সাক্ষাৎকার ক্যাটাগরিতে প্রথম রানার আপ এবং সিরিজ রিপোর্ট ক্যাটাগরিতে প্রথম রানার আপ হন। বর্ষসেরা ২০২১ ক্রীড়া সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে আরাফাত হন দ্বিতীয় রানার আপ। আরাফাত জোবায়ের ২০২১ সালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সেরা ক্রীড়া সাংবাদিকের অ্যাওয়ার্ডও অর্জন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সেরা রিপোর্টার-২০২২ (যৌথভাবে) নির্বাচিত হন ঢাকা পোস্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আমজাদ হোসেন হৃদয়। গত বছরের ২২ আগস্ট ‘খরচ বাঁচাতে খাওয়া কমিয়েছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা’ শিরোনামে ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সেরার পুরস্কার পায়।
লেখনীর মাধ্যমে মেডিয়েশনের প্রচার-প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিমস) কর্তৃক ‘বিমস গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেদী হাসান ডালিম। গত বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে বাংলাদেশ আইন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ তার হাতে এ সম্মাননা তুলে দেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে বাস্তবায়নাধীন ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)’-এর আওতায় গত বছরের ২৯ আগস্ট ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক শাহাদাত হোসেন রাকিব পেয়েছেন ‘এলডিডিপি জার্নালিস্ট ফেলোশিপ’।
সংবাদ প্রকাশের ফলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ
শুধু পুরস্কার প্রাপ্তি নয়, ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদনে বদলে গেছে অনেক চিত্র। অনেকে পেয়েছেন আশ্বাস ও আস্থা।
গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে কক্সবাজারের চকরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ ভাই মারা যাওয়ার পর ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত হয় ‘চিকিৎসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে রক্তিমের পরিবার’ শীর্ষক প্রতিবেদন। ওই প্রতিবেদন ব্যাপক মানবিক আবেদন সৃষ্টি করে। প্রতিবেদনের কপি সংযুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র, ব্লাস্টসহ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন একটি রিট আবেদন দায়ের করে। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়া রক্তিম সুশীলের পরিবারকে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি দায়ের করা হয়।
গত ৩ জানুয়ারি ঢাকা পোস্টে ‘থার্টি ফার্স্টে বাজির শব্দে কাঁপছিল শিশুটি, পরদিন মৃত্যু’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের পর থার্টি ফার্স্টে আতশবাজি ফোটানো ও ফানুস ওড়ানো বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের হয় গত ১৬ জানুয়ারি। রিটে নববর্ষ বা উৎসবে শহর এলাকায় ফানুস ওড়ানো পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণার আবেদন করা হয়। সেই সঙ্গে বিকট শব্দ ও আতঙ্কে মারা যাওয়া শিশু তানজিম উমায়েরের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনাও চাওয়া হয়।
গত ১২ জুলাই ‘প্রণোদনার কথা বলে ফাঁসিয়ে দিল ৫ কৃষককে’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ঢাকা পোস্টে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ৩ অক্টোবর কৃষকদের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। জামিন আবেদনে ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। পাঁচ কৃষককে ৬ অক্টোবর এক বছরের জন্য জামিন দেন হাইকোর্ট।
ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত ‘ঢামেকের প্যাথলজি বিভাগ : ‘অনিয়ম’ যেখানে নিয়ম’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। অভিযান শেষে দুদক জানায়, মেডিকেলের প্যাথলজি বিভাগের স্টাফ, আনসার ও ডাক্তারদের এজেন্টের একটি সিন্ডিকেট মিলেমিশে দ্বিগুণ ও তিনগুণ দামে বাইরে পরীক্ষা করাতে বাধ্য করাসহ প্যাথলজি পরীক্ষায় রমরমা ব্যবসার সত্যতা পাওয়া গেছে।
প্রথম বছরের অর্জন
যাত্রা শুরুর প্রথম বছরেই অনেকগুলো পুরস্কার পান ঢাকা পোস্টের সংবাদকর্মীরা।
‘রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের’ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদনের জন্য ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আদনান রহমান এবং ‘বাল্যবিবাহ’ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদনের জন্য জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জসীম উদ্দীন পান মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২১।
এছাড়া অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আদনান রহমান ও জসীম উদ্দীন পান বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বর্ষসেরা রিপোর্টিং পুরস্কার।
একই বছর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আরাফাত জোবায়ের।
সম্পাদকের অনুভূতি
অল্প সময়ে ঢাকা পোস্টের অভাবনীয় অর্জন নিয়ে দারুণ আপ্লুত সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার। প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং অনলাইন গণমাধ্যমের উৎকর্ষতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ঢাকা পোস্ট একটি সুনির্দিষ্ট ব্রত নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। সেটি হলো- সবার আগে সঠিক খবর নিরপেক্ষভাবে পাঠক-দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আমি মনে করি সেই যাত্রায় আমরা এখন পর্যন্ত সফল হয়েছি। আগামীতে আরও বিস্তৃত পরিসরে পাঠক-দর্শকের সব ধরনের সংবাদের চাহিদা মিটিয়ে নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিয়ে আমরা সবার মনে স্থান করে নিতে চাই। পাঠক-দর্শকরাই আমাদের কাজের বড় প্রেরণা। তারা শুরু থেকে আমাদের সঙ্গে আছেন বলে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই যুগে প্রতিটি পাঠকই একেকজন বিচারক। তারা আমাদের খবরের মান বিচার করবেন এবং ভালো ভালো পরামর্শ দিয়ে আমাদের এগিয়ে চলায় শক্তি যোগাবেন। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ইতিহাসে ঢাকা পোস্ট সুস্পষ্ট দাগ রেখে যাবে— এমন প্রত্যাশা রইল। সবাইকে শুভেচ্ছা। ’
সূত্র : ঢাকা পোস্ট