কক্সবাজারের রামুতে সমির ধর হত্যার ঘটনায় ৭জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনারদিন, শুক্রবার রাতে রামু থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত সমির ধরের ছেলে অষ্টম ধর। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত রিজন ধর ও তার পিতা বাবুল ধরকে আটক করা হয়েছে। পলাতক রয়েছেন আরও ৫ জন। এরা হলেন- বাবুল ধরের ছেলে মিঠন ধর, মৃত দয়াল হরি ধরের ছেলে আপন ধর, চিত্তরঞ্জন ধরের ছেলে শিমুল ধর, ছোটন ধর ও নেপাল ধরের ছেলে মিঠু ধর।
এদিকে বর্বরোচিত এ হত্যাকান্ডে জড়িত সকল আসামীদের অবিলম্বে গ্রেফতার পূর্বক ফাঁসির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩ টায় রামুর পশ্চিম ধরপাড়া স্টেশনে এ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোদেস্তা বেগম রীনা, রামু উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক, স্থানীয় ইউপি সদস্য এরশাদ উল্লাহ, সাবেক ইউপি সদস্য ছৈয়দ নূর, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট রামু শাখার সভাপতি ও রামু প্রেস ক্লাবের সদস্য সুজন চক্রবর্তী, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট রামুর সাধারণ সম্পাদক বিবেকানন্দ শর্মা, মগধেশ্বরী মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক শয়ন ধর, সমাজসেবক অজিত ধর, সুলাল ধর প্রমূখ।
এতে হত্যাকান্ডের শিকার সমির ধরের পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন- ভাতিজা সুকুমার ধর। মানববন্ধনে নিহত সমির ধরের স্ত্রী ও ৩ শিশুপুত্র উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন চলাকালে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সমীর ধরের স্ত্রী।
সমাবেশে বক্তারা বলেছেন- জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সন্ত্রাসী কায়দায় ছুরিকাঘাত করে সমির ধরকে হত্যা করা হয়েছে। এ ধরণের জঘন্য ও বর্বরোচিত হত্যাকান্ড পুরো এলাকাবাসীকে বাকরুদ্ধ করেছে। এ ধরনের ঘটনার পূনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেজন্য এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেক অপরাধির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ ঘটনার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনতায় সহায়তায় বাবুল ধর, রিজন ধরকে আটক করা হয়েছে। পলাতক আরও ৫ আসামীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। নইলে ভবিষ্যতের আরও বৃহৎ আন্দোলন-কর্মসূচি পালন করা হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে রাজারকুল ও দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। এসময় উপস্থিত সকলের হাতে হত্যাকান্ডে জড়িতদের শাস্তির দাবি সম্বলিত পোষ্টার দেখা যায়।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ারুল হোসাইন জানিয়েছেন- এ ঘটনায় ৭ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা (নং ৩২) রুজু হয়েছে। ঘটনার পরপরই প্রধান অভিযুক্ত ২ জনকে আটক করে পুলিশ। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
প্রসংগত গত শুক্রবার দুপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাবুল ধর ও তার পুত্র রিজন ধরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে হামলাকারিদের বেপরোয়া ছুরিকাঘাতে সমির ধর, তাপস ধর ও সুকুমার ধর গুরতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে প্রাণ হারান সমীর ধর। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে এখনো উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।