নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা বলেছেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনে ইসির প্রস্তাবটি আগামী ২৮ মার্চ মন্ত্রিপরিষদে উঠবে। মন্ত্রিপরিষদে সংশোধনী প্রস্তাবটি পাশ হলে যুগান্তকারী আইন হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
রাশেদা সুলতানা বলেন, আরপিও পাস হলে কমিশন, যারা ফিল্ডে কাজ করবেন, প্রত্যেকের জন্য খুব ভালো একটা কাজ হবে। আমাদের জন্য অনেকটাই ভালো হবে। বাংলাদেশ থেকে সবকিছু (নির্বাচনী অপরাধ) নির্মূল করা সম্ভব নয়। তবে অনেকটাই হ্রাস হবে বলে আশা করি। শতভাগ বন্ধ করা সম্ভব হবে না। যেমন ফাঁসির আইন আছে দেশে, তাই বলে কি খুন বন্ধ আছে? তা তো নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পর ভোট বাতিলের ক্ষমতা দেওয়াসহ বেশকিছু বিধান আনতে আরপিও সংশোধনে ইসির প্রস্তাবটি আগামী ২৮ মার্চ মন্ত্রিপরিষদে উঠবে। মন্ত্রিপরিষদে পাস হলে সংসদে যাবে। সংসদ যেভাবে পাস করে দেবে, সংযোজন হলেও হতে পারে, জানিনা।
তিনি আরও বলেন, সংশোধনী প্রস্তাব পাস হলে যুগান্তকারী আইন হবে। প্রার্থী, সমর্থক সবার আচরণগত পরিবর্তন হবে। এক বছরের মতো হলো আইনটা পাঠানো (সরকারের কাছে) হয়েছে। যে অপরাধগুলোকে অপরাধ হিসেবে ছিল না, আমরা সেগুলোকে চিহ্নিত করে শাস্তির বিধানের সুপারিশ করেছি।
গণমাধ্যমের ইকুইপমেন্ট কেড়ে নেয়, সেটাও অপরাধের আওতায় আসবে। সঙ্গত কারণেই যারা এ কাজ করবেন আইনটা হলে একটু হলেও মনের মধ্যে খটকা লাগবে, যে আমি এ কাজ করেছি, আমাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। দশজনের না হোক দুইজনের হলেও তো হলো। এতে যদি ক্ষান্ত দেয় এটাও তো বড় অর্জন মনে করি।
রাশেদা সুলতানা বলেন, প্রস্তাবে ভোটারদের বাধা দেওয়ার বিষয়টি আছে। তারপরে আরও অনেকগুলো আছে তবে কী কী আছে এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। ফলাফলে যদি ম্যালপ্র্যাকটিস নজরে আসে সেখানে কিন্তু কমিশন বন্ধ (নির্বাচন) করার ক্ষমতা যেন থাকে সে বিষয়টাও কিন্তু আছে। এগুলো আসলে নির্বাচনে একটা ছাপ ফেলবে।
আইন পাস হলে প্রয়োগ করতে পারবে ন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে এ নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আমাদের যতটুকু দরকার করতে পারব। বাকিটা তো বিচারের প্রক্রিয়ায় চলে যাবে। সেগুলো করতে গিয়ে বিভিন্নভাবেই আইনটা জনগণের প্রত্যাশিত জায়গায় যায় না প্রমাণ না থাকার কারণে। এতে খালাস পেয়ে যায়, এটা আইনেরই প্রক্রিয়া। আমরা কিন্তু অতীতে প্রয়োগ করেছি। এলেঙ্গা পৌরভোটে মারামারি হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। কেবল এলেঙ্গায় নয় অনেক জায়গায় আমরা অনেক ব্যবস্থা নিয়েছি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইন না জানাও কিন্তু একটা অপরাধ। কোনো আইন পাস হলে যখন গেজেট হয়ে যায়, তখন প্রাপ্ত বয়স্ক কেউ বলতে পারবেন না যে আমি জানি না। জনে জনে, ঘরে ঘরে গিয়ে তো আর আইন পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়। যেহেতু গেজেট হয়ে গেছে তাই ধরে নিতে হবে তা সবাই জানে।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট