বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের গেরিলা যোদ্ধা পরেশ বড়ুয়া মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি কক্সবাজারের রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের পূর্ব রাজারকুল বড়ুয়া পাড়ার লক্ষিচরণ বড়ুয়া মহাজন পরিবারের প্রয়াত রাজমোহন বড়ুয়ার সন্তান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। মুক্তিযোদ্ধা পরেশ বড়ুয়া এক সন্তান সহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
শুক্রবার (১৬ জুন) ভোর ৪ টার দিকে তিনি কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মুস্তফার নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরেশ বড়ুয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এসময় স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা পরেশ বড়ুয়ার গায়ে জড়িয়ে দেয়া হয়।
বীরমুক্তিযোদ্ধা পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাকে দেখতে যান। এসময় তিনি বীরমুক্তিযোদ্ধা পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন ও প্রয়াতের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এছাড়া রামু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন, রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, রামু মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নুরুল হক চেয়ারম্যান, ডেপুটি কমান্ডার রনধীর বড়ুয়ার নেতৃত্বে রামুর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, রামু মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি আনছারুল হক ভুট্টো, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক খালেদ হোসেন টাপুর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরেশ বড়ুয়ার স্মরণে পূর্ব রাজারকুল বৌদ্ধ বিহারে অনিত্য সভা অনুষ্ঠিত হয়। রামু উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বনবিহারের পরিচালক বিজয় রক্ষিত মহাথেরোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ স্মৃতিচারণ করেন। পরে পূর্ব রাজারকুল বৌদ্ধ শ্মশানে তাঁর অন্ত্রেষ্ট্যিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
উল্লেখ্য যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা পরেশ বড়ুয়া ভারতের ত্রিপুরা হরিণা ইউত ক্যম্পে দীর্ঘদিন গেরিলা প্রশিক্ষণ শেষে প্রিয় মাতৃভূমি রক্ষায় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।