মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা আজ বৃহস্পতিবার। যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।
মহান আল্লাহর অশেষ অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুয়ায়ী পশু কোরবানি করবেন। নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকেই যাবেন কবরস্থানে। চিরবিদায় নেয়া স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অশ্রুসজল চোখে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে আকুতি জানাবেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীসহ বিশ্বের মুসলমানদের আন্তরিক অভিনন্দন ও মোবারকবাদ জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপ্রধান তার বাণীতে বলেন, ‘মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। ‘আজহা’ অর্থ কোরবানি বা উৎসর্গ করা। ঈদুল আজহা উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে চরম ত্যাগের শিক্ষা ও প্রভু প্রেমের পরাকাষ্ঠা। মহান আল্লাহর নির্দেশে স্বীয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করতে উদ্যত হয়ে হযরত ইবরাহীম (আ.) আল্লাহর প্রতি অগাধ ভালোবাসা, অবিচল আনুগত্য ও অসীম আত্মত্যাগের যে সুমহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা ইতিহাসে অতুলনীয়।’
‘করোনা মহামারির অভিঘাত ও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী। এ প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী নিম্ন আয়ের মানুষ নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝে দিনাতিপাত করছে।’
তিনি সমাজের দারিদ্র্যপীড়িত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এবং তাদের পাশে দাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি দেশের বিত্তবান ও সচ্ছল ব্যক্তিবর্গকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। ত্যাগের শিক্ষা আমাদের ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলিত হোক এটাই সবার কাম্য।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘মহান আল্লাহর নিকট কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য শুদ্ধ নিয়ত ও বৈধ উপার্জন আবশ্যক। সরকার নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করে এবং বর্জ্য অপসারণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ বন্ধে সবাই সচেষ্ট থাকবেন বলে আমি আশা রাখি। পবিত্র ঈদুল আজহা সবার জন্য বয়ে আনুক কল্যাণ, সবার মধ্যে জেগে উঠুক ত্যাগের আদর্শ। ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ‘প্রতিবছর এ উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে স্বচ্ছল মুসলমানরা কোরবানিকৃত পশুর গোস্ত আত্মীয়স্বজন ও গরিব-দুঃখীর মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে মানুষে-মানুষে সহমর্মিতা ও সাম্যের বন্ধন প্রতিষ্ঠা করেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মুসলমানদের ত্যাগ, আত্মশুদ্ধি, সংযম, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন পরিব্যাপ্তি লাভ করুক- এটাই হোক ঈদ উৎসবের ঐকান্তিক কামনা। হাসি-খুশি ও ঈদের অনাবিল আনন্দে প্রতিটি মানুষের জীবন পূর্ণতায় ভরে উঠুক।’
ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি প্রত্যাশা করি, প্রতিবারের মত এবারও ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জীবনে সুখ ও আনন্দের বার্তা বয়ে আনবে।’
সূত্র : ঢাকা পোস্ট