ইউরোপের একাধিক দেশে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। বুধবার সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে মরক্কো এ বিষয়ক একটি নিন্দা প্রস্তাব (রেজোল্যুশন) উত্থাপন করলে পরিষদ তা গ্রহণ করে।
রেজোল্যুশনে অবশ্য কোরআন পোড়ানোর বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, ‘মানুষের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত এবং পবিত্র গ্রন্থ বা প্রতীককে বিকৃত বা বিনষ্ট করা সম্পর্কিত যাবতীয় কর্মকাণ্ডকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং এই ধরণের আচরণ বা কার্যাবলীকে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব জানাচ্ছে।’
সাধারণ পরিষদ জাতিসংঘের প্রধান অঙ্গসংস্থা। জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্যরাষ্ট্র এই পরিষদের সদস্য। বর্তমানে সাধারণ পরিষদে সদস্যরাষ্ট্রের সংখ্যা ১৯৩।
গত ২৭ জুন সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে প্রথমবার কোরআন পোড়ানো হয়েছিল। এই কাজ যিনি করেছিলেন, সেই সালওয়ান মোমিকা (৩৭) একজন ইরাকি মুসলিম এবং শরণার্থী হিসেবে সুইডেনে গিয়ে সেখানকার নাগরিকত্ব নেন।
ওই ঘটনার পর মুসলিম দেশগুলোর জোট অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) সমর্থন নিয়ে ১২ জুলাই জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে (ইউএনএইচআরসি) নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল পাকিস্তান।
পাকিস্তান এই প্রস্তাব উত্থাপনের পর ইউএনএইচআরসির ৪৭টি সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ২৮টি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ায় পাস হয়েছিল সেটি।
কিন্তু তারপর ফের কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে সুইডেনে। গত ১৯ জুলাই সুইডেনে ইরাকি দূতাবাসের সামনে কোরআন ও ইরাকের জাতীয় পতাকা পোড়ায় একটি সুইডিশ উগ্রপন্থী ডান সংগঠন।
তারপর গত সোমবার ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে ইরাকি দূতাবাসের সামনে পোড়ানো হয় কোরআন।
ডেনমার্কে কোরআন পোড়ানোর ২ দিনের মধ্যে সাধারণ পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব আনল মরক্কো এবং তা গৃহীতও হলো।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গণে শান্তিকামী ও সহনশীল দেশ হিসেবে মরক্কোর খ্যাতি রয়েছে। পূর্ব আফ্রিকা ও আরব সংস্কৃতির দেশ হলেও মরক্কোর অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার ভিত্তি বেশ দৃঢ়। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দেশটিকে শান্তি, সহনশীলতা, আন্তধর্মীয় এবং আন্তসাংস্কৃতিক বন্ধুত্বের অন্যতম দূত বলে বিবেচনা করা হয়।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট