কক্সবাজার-৩ আসনে আবারও নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন জননেতা সাইমুম সরওয়ার কমলকে দেয়ার দাবি করেছেন লাখো জনতা। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় লাখো জনতা দুই হাত তোলে এ দাবি করেন। এ জনসভায় আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি সহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং ধর্মীয় ও পেশাজীবি নেতারা বক্তৃতা করেন। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি জাফর আলম চৌধুরী এ জনসভায় সভাপতিত্ব করেন।
জনসমুদ্রে পরিণত এ জনসভায় সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, যারা দলের দূর্দিনে পাশে ছিলো না, মানুষের দূর্দিনে খবর নেয়নি, করোনাকালে ঘরের বাইরে আসেনি- তারা এখন নৌকার মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের মানুষ কখনো দেখেনি। অনেকের নামও মানুষ জানেনা। অনেক নেতা তিন উপজেলার সকল ইউনিয়নের নাম ও ইউপি চেয়ারম্যানদের নামও বলতে পারবে না। একমাস আগে সৃষ্ট বন্যাতেও এসব নেতাদের মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। এসব নব্য নেতারা এখন নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার মতোই আমার মনোনয়ন ঠেকাতে একজোট হয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ঠাঁই দলেও নাই, মানুষের হৃদয়েও নাই। এরা নিশ্চিত ভরাডুবি জেনেই দলের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য মনোনয়ন নাটক শুরু করেছে’।
এমপি কমল বলেন, রেল লাইন, আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর, গভীর সমুদ্রবন্দরসহ অনেক মেঘা প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করে সরকার কক্সবাজারের চেহারা পাল্টে দিয়েছে। চার লেনের সড়ক, বড় বড় সেতু নির্মাণ হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও অকল্পনীয় উন্নয়ন হয়েছে। করোনা মহামারী এবং ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধে বিশ্বের অনেক দেশ বিপর্যস্ত ও অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হলেও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। দেশের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধিন সরকারকে আবারো ক্ষমতায় আনার বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দেশের কাংখিত উন্নয়ন-অগ্রগতি সম্ভব। বর্তমান সরকারের আমলে মানুষ তার প্রমান পেয়েছে। তাই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় এনে এদেশের ১৬ কোটি মানুষের নিরাপত্তা, অধিকার ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে নৌকা প্রতীককে বিপুল ভোটে জয়ী করতে হবে।
শনিবার দুপুর ২ টা থেকে রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে হাজার হাজার জনতা নেচে-গেয়ে এবং মিছিল সহকারে এ বিশাল জনসভায় যোগদান করেন। স্টেডিয়ামের উত্তর প্রান্তে নির্মিত বিশাল উন্মুক্ত মঞ্চে দুপুরের পর থেকে চলে নেতাকর্মীদের বক্তব্য। জনসমাবেশকে ঘিরে জনতার বাঁধভাঙ্গা উউচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে স্টেডিয়ামের বাইরে চৌমুহনী স্টেশন হয়ে বাইপাস ফুটবল চত্বরসহ আশপাশের ৩ কিলোমিটার সড়কে।
জনসভায় এমপি কমল আরও বলেন, বিগত ১০ বছর সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছি। প্রতিটি গ্রাম, গলি-গলি আমি চষে বেড়িয়েছি। সেবা করতে গিয়ে কখন রাত, কখন দিন বুঝতে পারিনি। আমার নিরলস পরিশ্রমে অসংখ্য মানুষকে সেবা দিয়েছি। নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, রামু কলেজ ও রামু খিজারী উচ্চ বিদ্যালয় সরকারিকরণ ও বিকেএসপি স্থাপনের মাধ্যমে রামুকে শিক্ষার নগরী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
সমাবেশে আওয়ামী লীগ, সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলেন- কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর, রামু, ঈদগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বিগত ১০ বছর দায়িত্ব পালনকালে সবসময় মানুষের সুখে-দুখে পাশে ছিলেন। রামুর ১১টি ইউনিয়নের সড়ক, সেতু, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল-ক্লিনিক দেখলেই বুঝা যায়, এমপি কমল মানেই উন্নয়নের রূপকার। তাই উন্নয়নের রূপকার সাইমুম সরওয়ার কমলই আওয়ামী লীগের যোগ্য মনোনয়ন প্রত্যাশী।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি তপন মল্লিক ও রামু উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের সহধর্মিনী সৈয়দা সেলিনা সরওয়ার, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মুসরাত জাহান মুন্নী, কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য ফরিদুল আলম, চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো, ঝিলংজা ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামশুল আলম, ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভূট্টো, রশিদনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এমডি শাহ আলম, কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু মো. ঈসমাইল নোমান, রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, খুরুশকুল ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান ছিদ্দিকী, চৌফলদন্ডী ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, ভারুয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা, কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য নুরুল হক, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন, খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল গণি, আবদুল মাবুদ, গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ ভূট্টো, কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মলেন প্রস্তুতি কমিটির সাবেক সদস্য সচিব এডভোকেট একরামুল হুদা, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রুস্তম আলী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক নুর আল হেলাল, রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক, সহ সভাপতি আনছারুল হক ভূট্টো, আওয়ামীলীগ নেতা মাস্টার ফরিদ আহমদ, গোলাম কবির মেম্বার, আইয়ুব সিকদার, ওসমান সরওয়ার মামুন, জহির উদ্দিন, আবছার কামাল সিকদার, জহির উদ্দীন সিকদার, সৈয়দ মোহাম্মদ আবদুস শুক্কুর, জেলা তাঁতীলীগের সহ সভাপতি মোস্তাক আহমদ, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক তসলিম উদ্দিন সোহেল প্রমূখ।