নানা আয়োজনে লামায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় দাদার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
সারা দেশের মতো বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে লামা পৌর আ, লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে জেলা পরিষদ গেষ্ট হাউজ কেক কাটা, আলোচনা সভা ও দোয়া মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লামা পৌর আ, লীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর মোঃ রফিক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা জামাল।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও নারীনেত্রী ফাতেমা পারুল, সম্পাদক শ্যামলী বিশ্বাস, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ জাহেদ উদ্দিন ও মিলকী রাণী দাশ,লামা উপজেলা আওয়ামী সহ সভাপতি বিজয় আইচ, লীগের সাংগঠিক সম্পাদক প্রদীপ কান্তি দাশ, ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা, মিন্টু কুমার সেন, ওমর ফারুক সহ প্রমূখ। এছাড়া বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক, শিক্ষক ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও প্রতিষ্টান পৃথকভাবে শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘায়ু কামনায় বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া পরিচালনা করেন লামা কোর্ট জামে মসজিদের খতীব মাওলানা আজিজুল হক।
শেখ হাসিনার ডাক নাম হাসু (হাচু)। পিতা বঙ্গবন্ধু আদর করে এই নামেই ডাকতেন তাকে। শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে দাদা-দাদির কোলে-পিঠে মধুমতি নদীর তীরে টুঙ্গিপাড়ায়। তারা পাঁচ ভাই-বোন। অপর চার জন হচ্ছেন, শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা এবং শেখ রাসেল। ভাই-বোনদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও রেহানা ছাড়া কেউই জীবিত নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে পিতা বঙ্গবন্ধু এবং মাতা ফজিলাতুন নেছাসহ সবাই ঘাতকদের হাতে নিহত হন।
শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। তখন পুরনো ঢাকার রজনী বোস লেনে ভাড়া বাসায় তারা ওঠেন।
বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য হলে সপরিবারে ৩ নম্বর মিন্টু রোডের বাসায় তারা বসবাস শুরু করেন। শেখ হাসিনাকে ঢাকা শহরে টিকাটুলির নারী শিক্ষা মন্দিরে (বর্তমানে শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়) ভর্তি করা হয়। পরে তিনি ভর্তি হন আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয়ে। সেখান থেকেই তিনি ১৯৬৫ সালে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
পিতা বঙ্গবন্ধু আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় কারাগারে থাকাকালে ১৯৬৮ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনার বিয়ে হয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যাওয়ার পর গোটা পরিবারকে ঢাকায় ভিন্ন এক বাড়িতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। অবরুদ্ধ বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই শেখ হাসিনা গৃহবন্দি অবস্থায় তার প্রথম সন্তান ‘জয়’-এর জন্ম হয়। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর কন্যা সন্তান পুতুলের জন্ম হয়।
মানবিকতার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশী-বিদেশী খেতাব, সম্মাননা ও ডিগ্রি লাভ করেন।