আগামী নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আবার তারা (সরকার) বলতে শুরু করেছে এবং জোরেশোরে বলছে যে— সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করবো, সেভাবে নির্বাচন হবে এবং সেটা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। কিছুক্ষণ আগে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করে একই কথা বলেছেন।’
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) গণঅধিকার পরিষদের (নুরুল হক নুর) এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এদিন রাজধানীর পুরানা পল্টনে ফকিরাপুল কালভার্ট রোড মোড়ে পুরানা পল্টনে গণঅধিকার পরিষদের উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের’ দাবিতে এই সংহতি সমাবেশ হয়।
তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা দিয়ে মানুষকে প্রতারণা করা, তাদের বোকা বানানোর চেষ্টা করা এবং খালি মাঠে; আমরা যেটাকে বলি ওয়াকওভার নিয়ে আবার সরকার গঠন করা…, এটা করার ব্যাপারে বাধা এসেছে। কোত্থেকে এসেছে? পশ্চিমা বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলো তারা বাধা দিয়েছে…। তারা বলেছে— ওই ধরনের ওয়াকওভার মার্কা নির্বাচন চলবে না। এবার একটা সুষ্ঠু ও অবাধ অংশগ্রহণকারী নির্বাচন হতে হবে। আমরা বলেছি— ওই নির্বাচন হতে হলে হাসিনার অধীনে হবে না, সম্ভব নয়… তাই না। সুতরাং আমাদের কথা একটাই যে, এই সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচন হতে পারে না।’
এই সরকারের অধীনে ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের নমুনা’ও তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যত নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে এত বছর তারা এই মামলাগুলো ফেলে রেখে দিয়েছিল। এখন তারা অতি দ্রুত এই মামলাগুলো নিষ্পত্তি করে বিরোধীদের নেতাদের সাজা দেওয়ার জন্য স্পেশাল সেল তৈরি করেছে। তারা নির্দেশ দিয়েছে— ম্যাজিস্ট্রেটদের, বিচারকদের অতিদ্রুত বিচার দুই মাসের মধ্যে শেষ করো। পরিষ্কার বলেছে— যেগুলোর চার্জশিট হয়নি, সেগুলোর চার্জশিট করো অতিদ্রুত। এগুলোর নাম হচ্ছে তাদের সুষ্ঠু নির্বাচন।’
তিনি বলেন, ‘যারা খেলবে মাঠে… উনি সবসময় বলেন না…। আমাদের ওবায়দুল কাদের সাহেব (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) যে খেলা হবে…। উনি সবসময় বলেন— খেলা হবে। খেলবেন কি? কার সঙ্গে খেলবেন? যাদের সঙ্গে খেলবেন, তাদের জেলে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে, তারা এমন কথা বলছে; যা মুখে আনা যায় না… অশালীন অরুচিকর কথা। এটা পরিষ্কার আপনি যে তার মৃত্যু চান, তাকে হত্যা করতে চান এটা পরিষ্কার আপনার কথায় যে…. আর কত বাঁচবে? বাঁচানোওয়ালা, মান দেনেওয়ালা আল্লাহ। পরিষ্কার করে বলতে চাই, এবার আপনাকেও গুণতে হবে। আপনি কতদিন টিকে থাকবেন এই ক্ষমতায়। জনগণ আপনাকে টেনে হিঁচড়ে নামাবে।’
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় সংহতি সমাবেশে কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবব্রাহিম, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, রিপাবলিকান পার্টির কেএম আবু হানিফ ও সম্মিলিত শ্রমিক অধিকার পরিষদের এএম ফয়েজ উদ্দিন প্রমুখ দেন।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন