সাগর পাড়ে পৌঁছে গেলো রেলগাড়ি। স্বাধীনতার দীর্ঘ বছর পরে কাংখিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন হলো। গতকাল রবিবার (৫ নভেম্বর) শেষ বিকাল ৫টা ৩১ মিনিটে হুইশেলের শব্দে জানান দেয় রামুতে রেল আগমনের খবর। এতে উদগ্রীব হয়ে উঠে রামু রেল জংশনে উপস্থিত শত শত জনতা। ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকতে রেল আসার মুহুর্তটি স্মার্ট ফোনে ধারণ করে নেয়, উদগ্রীব উৎসাহী শত শত জনতা।
একটি সূত্রে জানা গেছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনী দিনে, রামু রেল জংশন থেকে নিজ হাতে টিকেট ক্রয় করবেন এবং রামু রেল জংশন থেকে রেলে চড়ে কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশনে পৌঁছাবেন। তবে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেও যাত্রী হিসেবে কক্সবাজারের মানুষ ঢাকা যেতে পারবেন ডিসেম্বরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে। রেলে চড়ার জন্য কক্সবাজারের আপামর জনসাধারণকে আগ্রহভরে অপেক্ষায় থাকবে হবে ততদিন।
রবিবার সন্ধ্যায় রামু রেল জংশনে পৌঁছার একটু আগে রামু বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় থামে, পরীক্ষা মুলক প্রথম আসা রেলগাড়িটি। রেল কর্তৃপক্ষ জানান, সকাল ৯টায় চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে ছেড়ে আসে এই রেলগাড়ি। পথিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে থামানো হয় এবং ওই সব স্থানের সড়কে কোন ত্রুটি আছে কিনা তা দেখা হয়। রেলটি রামু বাইপাস আন্ডারপাসে আধঘন্টা পর্যন্ত অবস্থান করে। এসময় দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের ইন্সপেকশন টিমের কর্মকর্তারা আন্ডারপাস ও রেল সড়ক পরিদর্শন করেন। সন্ধ্যা ৬টা ২ মিনিটে সমুদ্র শহর কক্সবাজারে আসা রেলগাড়িটি রামু রেল জংশন অতিক্রম করে।
কেবল রামু স্টেশন নয়, রামু উপজেলার রশিদনগর, জোয়ারিয়ানালা, ফতেখাঁরকুল, রাজারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের উপর দিয়ে যাওয়া পুরো রেল পথের দুধারে শত শত নারী-পুরুষ রেল দেখতে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভীড় জমান।
রেল আগমনে খবরে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন উন্মোচিত হওয়ায়, স্থানীয় জনতা সহ রাজিনৈতিক ও সামাজিক নেতাকর্মীরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তোলে রামু রেল জংশন।
জানা গেছে, দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে ট্রেনের ট্রায়াল রান নয়; মূলত এই রেলপথের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন ও কোনো ত্রুটি আছে কি না যাচাই করতে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজার আসে এ রেল। আটটি বগি ও একটি ইঞ্জিন নিয়ে আসা এ রেল লাইন ঠিক আছে কিনা রেল চলতে পারবে কিনা, সেটা তাদের যাচাই করেছে। আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথ উদ্বোধন করবেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অতি: মহাপরিচালক (অবকাঠামো) মো. মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।