প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু:
আজ রামু হাসপাতালে যোগাযোগ করে জানতে পারি আহত কিশোরী হ্লা নু প্রু চাককে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখি সেখানে রোগী নেই। পরে নিশ্চিত হলাম রোগী বেসরকারি সেন্ট্রাল হাসপাতালে পাঁচ তলায় ৫০১ নং কক্ষে আছে। সেখানে মা, বাবা ও তার খালু উচাহ্লা চাককে পেলাম। কথা হয় তাদের সাথে। তবে হ্লা নু প্রু কথা বলার মত অবস্থায় নেই।
কিশোরী হ্লা নু প্রু চাক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শেষে খালু উচাহ্লা চাক এর সাথে বাড়ি ফিরছিলেন। ২৫ ও ২৬ অক্টোবর মাস্টার্সের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে ২৭ অক্টোবর বিকেলে গাড়ি ধরে সন্ধ্যা সাতটার পরে রামু বাইপাস নামেন। সেখান থেকে রিক্সাযোগে চৌমুহনী স্টেশনে আসেন। এসে একটা সিএনজি রিজার্ভ করেন নাইক্ষ্যংছড়ি যাওয়ার জন্য।
কিশোরী হ্লা নু প্রু চাক তার ব্যাগ নিয়ে সিএনজিতে বসেন। খালু উচাহ্লা চাক পান নিতে সিএনজি থেকে একটু দূরে এক দোকানে গেলেন।
তিনি বার বার ফিরে ফিরে দেখছিলেন সিএনজি টিক জায়গায় আছে কিনা। চোখের পাতা ফেলতে না ফেলতে চালক অতি দ্রুত তার সিএনজি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।সিএনজি চালক ওই কিশোরী মেয়েকে অপহরণের উদ্দেশ্যে গাড়িযোগে দ্রুত সটকে পড়েন এতে কোন সন্দেহ নেই।
একপর্যায়ে দ্রুতগামি গাড়িটি গ্রামীণ ব্যাংকের কাছাকাছি গেলে নিজেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে চলন্ত গাড়ি থেকে লাফ দেন হ্লা নু প্রু চাক। এসময় অবস্থা বেগতিক দেখে চালক আর থামেননি।
হ্লা নু প্রু চাক যেখানে পড়েন সেখানে থাকা ওসমান গনি নামে এক স্থানীয় যুবক হ্লা নু প্রু চাককে দেখেন। তিনি ডেকে নিলেন রাসেলকে। পরে আরো কয়েকজন মিলে আহত এবং অচেতন হ্লা নু প্রু চাককে উদ্ধার করে পাশের হাসপাতালে নিয়ে যান।সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রেফার করা হয় কক্সবাজারে।
ক্যউচিং চাক আমাদের রামুকে বলেন, ‘আমার মেযেকে অপহরণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সে সাহস করে চলন্ত গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে কোনমতে আত্মরক্ষা করে।কিন্তু তার শরীরের মুখমন্ডল, মাথা, হাতে পায়ে মারাত্নত জখম হয়েছে।আমি এই জঘন্য ঘটনার ন্যায় বিচার চাই।’
আহত কিশোরীর খালু উচহ্লা চাক বলেন, ‘এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং শাস্তি না হলে এমন ঘটনা আরো ঘটতে থাকবে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রামু সার্কেল আমাদের রামুকে বলেন, ‘এখনই দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবেনা।’
রামু থানার ওসি আমাদের রামু কে বলেন, ‘সিএনজিটা জব্দ করেছি। ওই ছাত্রীটির ব্যাগ এবং ব্যাগের মধ্যে থাকা টাকা, মোবাইল এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলোও উদ্ধার করেছি। আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।আসামী দ্রুত ধরা পড়বে।’