মইন উদ্দীন :
অবশেষে বহু প্রতিক্ষিত কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের ১২১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। রাত ১২ টা ৪০ মিনিটের দিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয় ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ পৃথক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে কমিটি অনুমোদন দেয়ার বিষয়টি জানান। রাতে কথা হলে- জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয় বলেন, যেকোন মুহুর্তে গণমাধ্যমে বিবৃতি আকারে পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হবে। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্বাক্ষর করে অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
জানা যায়- কমিটিতে ‘পরিচ্ছন্ন ইমেজের’ প্রকৃত ছাত্রদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কোন অছাত্র, বিবাহিত, চাঁদাবাজ, মামলায় অভিযুক্ত আসামী বা বিতর্কিত কেউ কমিটিতে স্থান পাই নি। একটি স্বচ্ছ ও গ্রহনযোগ্য কমিটি উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে দীর্ঘ সময় নিয়ে কাজ করছেন জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান দুই শীর্ষ নেতা। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমদ জয় বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময় নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, যাছাই-বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য কাজ করেছি। এই কমিটিতে প্রকৃত ছাত্ররা স্থান পেয়েছে। যারা রাজপথে প্রকৃত যোদ্ধা হিসেবে ভূমিকা রেখেছে, যাদের বয়স ২৯ বছরের মধ্যে এবং ছাত্রত্ব আছে, তারাই কমিটিতে নেতা হয়েছে।
জেলাবাসীকে একটি পরিচ্ছন্ন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি উপহার দিবেন বলে জানান জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ। তিনি বলেন, ‘দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক পূর্ণাঙ্গ কমিটির আকার ১২১ সদস্যের। জেলা কমিটিতে স্থান পেতে পুরো জেলার প্রায় ৫ হাজার নেতা-কর্মী জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছিলো। তাদের মধ্যে থেকে যাছাই-বাছাই করে পরীক্ষিত কর্মীদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।’ দলীয় সূত্র জানিয়েছে, কেন্দ্র ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটির মেয়াদ এক বছর পূর্ণ হয়েছে গত ১০ জানুয়ারী।
২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির তৎকালীন সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেন। নতুন ওই কমিটিতে সভাপতি হন ইশতিয়াক আহমদ জয় এবং সাধারণ সম্পাদক হন ইমরুল হাসান রাশেদ। এর আগে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন দ্বিতীয় অধিবেশনে যাচাই-বাছাই শেষে সভাপতি পদে ১ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৫ জনসহ ৬ জনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। পরে ওই সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকেই নতুন কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
দলের কয়েক জন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী জানিয়েছেন, জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির দুই শীর্ষ নেতার প্রতি তৃণমূল নেতা-কর্মীরা সন্তুষ্ট। এই এক বছরে তারা দলকে এগিয়ে নিতে অনেক শ্রম দিয়েছেন। কক্সবাজারে ছাত্রলীগের অতীতের অনেক বদনামও ঘুচেছে এই দুই নেতার নেতৃত্বে। তারা দলের মধ্যে ‘শৃংখলা’ আনতে পেরেছেন। বর্তমানে ছাত্রলীগ অনেকখানি সুশৃংখল কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বহু বছর ধরে শিবিরের হাতে জিম্মি হয়ে থাকা কক্সবাজার সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের শক্ত অবস্থান তৈরী হয়েছে। দল গোছানোর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে উখিয়া উপজেলা, ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা, মহেশখালী উপজেলা, টেকনাফ উপজেলা, চকরিয়া পৌরসভা, চকরিয়া উপজেলা, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বহু বছর ধরে অনেকটা অকেজো হয়ে থাকা কুতুবদিয়া কমিটি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। কক্সবাজার সিটি কলেজেও নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।