নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া
আমাদের রামু ডটকম:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গভীর রাতে বাড়ির দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে মেহেরুন নিছা (১৭) নামের এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে অপহরণ করেছে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা।
তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় পরিবার সদস্যদের শোর-চিৎকারে উদ্ধারের জন্য প্রতিবেশী লোকজন এগিয়ে আসলে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেন।
শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের হাসেঁরদিঘী কাচারী পাহাড় এলাকায় ঘটেছে অপহরণ ও হামলার ঘটনা।
ঘটনার সময় ওই বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে তাৎক্ষনিক ঘটনাটি পরিবারের পক্ষ থেকে থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে রাত আড়াইটার দিকে থানার এসআই এনামুল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটিদল ঘটনাস্থলে পৌঁছেন।
তবে এর অনেক আগে অপহরনকারী দুর্বৃত্তরা ওই ছাত্রীকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
অপহৃত ওই ছাত্রী স্থানীয় মহিব উল্লাহ’র মেয়ে। চলতিবছর তিনি বাড়ির অদুরে অবস্থিত রসিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
রোববার শারিরীক শিক্ষা বিষয়ে তার পরীক্ষা থাকলেও অপহৃত হওয়ার কারণে ওই ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।
অপহৃত ওই ছাত্রীর বড় ভাই আবু ছিদ্দিক বলেন, শনিবার রাত ১১টার দিকে পরিবারের সকলেই খাওয়া ধাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আনুমানিক দুইটার দিকে ১০-১২জনের অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত বাড়ির প্রধান দরজাটি হাতুঁড়ি পিটিয়ে ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকেন। ওইসময় পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে তার ছোট বোন এসএসসি পরীক্ষার্থী মেহেরুন নিছাকে বাড়ি থেকে জোরপুর্বক টানা হেচঁড়া করে তুলে নিয়ে বাড়ির সামনে রাস্তায় অপেক্ষামান একটি মাইক্রোবাসে তুলে অজানার উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, বাড়িতে ঢুকে দুর্বৃত্তরা ব্যাপক ভাংচুর ও তান্ডব চালায়। পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে তাঁরা মারধর করেন। ওইসময় আমরা (পরিবার সদস্যরা) শোর চিৎকার করলে আশপাশের প্রতিবেশী লোকজন এগিয়ে আসতে চেষ্টা করেন।
এ অবস্থা দেখে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা পর পর ৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে এলাকায় ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি করেন। ফলে ওইসময় প্রাণে ভয়ে প্রতিবেশী লোকজন আর সামনে এগুতে পারেনি।
আবু ছিদ্দিক অভিযোগ করেছেন, বাড়িতে ঢুকে তার বোনকে অপহরণের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন একই ইউনিয়নের হাসেঁরদিঘী এলাকার আবু ছিদ্দিকের ছেলে শিবির ক্যাডার মহিউদ্দিন। ঘটনার সময় তার সাথে অংশ নেন আরো ১০-১২জন অস্ত্রধারী। বোনকে অপহরণ করার পেছনে প্রেম কিংবা অন্য কোন কারন আছে কিনা জানতে চাইলে আবু ছিদ্দিক বলেন, আমার বোনের সাথে অপহরণকারী চক্রের হোতা মহিউদ্দিন বা অন্য কারো সাথে কোন ধরণের সর্ম্পক নেই।
জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জহিরুল ইসলাম বলেন, রাতে এসএসসি পরীক্ষার্থী ওই ছাত্রীকে অপহরণ করার খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু ঘটনার অনেকক্ষণ পর পুলিশকে জানানো হয়েছে। তারপরও অনেক চেষ্টা করে অপহরণকারীদের পাকড়াও করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, এ ঘটনায় অপহৃতের পরিবার অভিযোগ দিচ্ছেন, এটি মামলা হিসেবে রুজু করা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে অপহৃত ওই ছাত্রীকে উদ্ধার এবং ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।