অনুপম বড়ুয়া টিপু:
সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় বিচরণের মাধ্যমে বিমলেন্দু বড়ুয়া বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন। পাশাপাশি সাংবাদিকতার দীপ্ত সাহসিকতায় অনন্য অবদান রেখে গেছেন। তাই তিনি বাংলা সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় সব্যসাচী কৃতিপুরুষ হিসেবে চিরজাগরুক হয়ে থাকবেন।১৮ মার্চ সাংবাদিক বিমলেন্দু বড়ুয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন-এর উদ্যোগে নন্দনকানন বৌদ্ধ মন্দির সড়কের ফুলকিস্থ এ কে খান স্মৃতি মিলনায়তনে প্রথিতযশা সাংবাদিক, বরেণ্য সাহিত্যিক, খ্যাতিমান কবি, বহুমুখী কর্মপ্রতিভার অধিকারী সব্যসাচী লেখক, মননশীল সমাজ বিনির্মাণের দৃপ্তমান সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব বিমলেন্দু বড়ুয়ার জীবনকীর্তি নিয়ে রচিত ‘বিমলেন্দু বড়ুয়া স্মারকগ্রন্থ’ প্রকাশনা উৎসবে বক্তারা উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন।
সাংবাদিক বিমলেন্দু বড়ুয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন-এর সভাপতি কবি ও সাহিত্যিক, প্রবীণ সাংবাদিক অরুণ দাশগুপ্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন উপসংঘনায়ক অধ্যাপক বনশ্রী মহাথের। বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার, সীতাকুন্ডস্থ লতিফা সিদ্দিকী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শিমুল বড়ুয়া। অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক বিমলেন্দু বড়ুয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন-এর মহাসচিব প্রদীপ কুমার বড়ুয়া আনন্দ এবং জীবনী পাঠ করেন অমিতাভ সম্পাদক শ্যামল চৌধুরী।
স্বপ্নীল বড়ুয়া ডানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন মৌমিতা বড়ুয়া মুনা। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. উদিতি দত্ত, বিশিষ্ট রম্যলেখক সত্যব্রত বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৌশলী পরিতোষ কুমার বড়ুয়া, অধ্যক্ষ দীপক কুমার তালুকদার, অটল বিহারী বড়ুয়া, ডা. মৃণাল কান্তি বড়ুয়া প্রমুখ।
পরিবারের পক্ষ থেকে অভিব্যক্তি জ্ঞাপন করেন বিমলেন্দু বড়ুয়ার কনিষ্ট কন্যা অন্তি বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বিমলেন্দু বড়ুয়ার প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন অমিতাভ সম্পাদক শ্যামল চৌধুরী, অমল চৌধুরী মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন এর পক্ষে অমরেশ চৌধুরী, সেন্টার অব এক্সেলেন্স ইন বুড্ডিস্ট স্টাডিজ’র পক্ষে সুপম বড়ুয়া, ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরাম এর পক্ষে নাসরিন সুলতানা খানম, নির্বাণা পিস ফাউন্ডেশনের পক্ষে মিথিলা চৌধুরী, সৌরভ বড়ুয়া ও সৈকত বড়ুয়া।
সাহিত্যিক সাংবাদিক বিমলেন্দু বড়ুয়া কর্মজীবনের শুরুতে শিক্ষকতা হলেও সাংবাদিকতায় তিনি দীর্ঘ ৪৫ বৎসর চট্টগ্রামের বহুল প্রচারিত ও জনপ্রিয় দৈনিক আজাদীতে অতিবাহিত করেন। সাহিত্যের বিভিন্নধারায় তাঁর সাবলিল দৃপ্ত পদচারণায় বাংলা সাহিত্যের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে নিঃসন্দেহে। ইতিমধ্যে তাঁর প্রায় ২৫ টির মতো বই প্রকাশিত হয়েছে। অপ্রকাশিত থেকে গেছে আরো ২৫ টির অধিক বই এর পান্ডুলিপি। সাংবাদিক বিমলেন্দু বড়ুয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন কর্তৃক তাঁর বর্ণাঢ্য সাহিত্যকৃতি ও সমাজসেবার কর্মকান্ডকে ধরে রাখতে ওয়েবসাইট প্রকাশ করা হয়েছে।
উলেখ্য, দীর্ঘ তিন মাস জাপান পরিভ্রমণ শেষে তিনি গত ২০০৭ এর ১০ জানুয়ারী স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন এবং ১৩ জানুয়ারী দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে ২২ জানুয়ারী ঢাকাস্থ এ্যাপলো হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।