আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাখাইন রাজ্যে মুসলিমদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের (এইচআরসি) একটি অনুসন্ধান মিশন পাঠানোর প্রস্তাব মিয়ানমার প্রত্যাখান করেছে।
শুক্রবার রাতে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক তদন্ত মিশন গঠন বিষয়টির সমাধানের পরিবর্তে এটিকে আরও উস্কে দিবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এইচআরসি’র এ পদক্ষেপ ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি বিচার করে নেওয়া হয়নি এবং মিয়ানমার সরকার দেশটির জনগণের স্বার্থে মানবাধিকার রক্ষায় পূর্ণ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
এর আগে শুক্রবার জেনেভায় অনুষ্ঠিত এইচআরসি’র ৩৪তম অধিবেশনে ভোটাভুটি ছাড়াই প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে অনুমোদিত হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়, দোষীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ওই তদন্ত শুরু হবে। সেপ্টেম্বরে তদন্তকারীরা মৌখিকভাবে তদন্তের তথ্য জানাবে আর আগামী বছরের একই সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেবে। চীন, ভারত, কিউবাসহ কয়েকটি দেশ ওই প্রস্তাব থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত বছর অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি,এরপর থেকেই রাখাইন রাজ্যে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। জাতিসংঘ এরইমধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ এনেছে। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডেরও অভিযোগ তোলা হয় দুই দফায়। এবারের সংঘর্ষে রাখাইন রাজ্যের মৃতের সংখ্যা ৮৬ জন বলে জানিয়েছে তারা। জাতিসংঘের হিসাব মতে,এখন পর্যন্ত ঘরহারা হয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। পালাতে গিয়েও গুলি খেয়ে মরতে হচ্ছে তাদের। ২০১২ সালে মিয়ানমার সরকারের মদদপুষ্ট উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের তাণ্ডবে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা নিহত হন। ঘর ছাড়তে বাধ্য হন ১ লাখেরও বেশি মানুষ।
সূত্র: বাংলাট্রিবিউন।