পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের মধ্যে জমি লিজের পরিবর্তে স্থায়ীভাবে জমির মালিকানা দেয়া যায় কিনা তা নিয়ে সরকার নতুন করে ভাবছে। যদিও বিষয়টি জটিল। কারণ পাহাড়ে বর্তমানে বাঙালিরাও বসবাস করছে। পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি ঝুলে আছে। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেও এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে জনস্বার্থে ধর্মীয় উপাসনালয়ের ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষমতা রেখে ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন ২০১৭’ এর খসড়ায় অনুমোদন দেয়া হয়। তবে এ আইনের প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে পাহাড়িদের মাঝে স্থায়ীভাবে জমি বরাদ্দ দেয়ার বিষয়ে এ সংক্রান্ত সব কমিটির সঙ্গে বসে আলোচনার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্রিটিশ আমলে করা আইন অনুযায়ী হেড ম্যান-এর সুপারিশে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পাহাড়িদের মধ্যে জমি লিজ দেয়া হয়। এভাবে জমি লিজ নিয়ে তারা চাষাবাদ করে আসছেন। তবে জনসংহতি সমিতিসহ পাহাড়িরা দীর্ঘদিন ধরে জমির স্থায়ী মালিকানার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
উল্লেখ্য, গত বছর ৫ ডিসেম্বর আইনটি নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। তবে এর আগে এ সংক্রান্ত কোনো পরিপূর্ণ আইন ছিল না। ১৯৮২ সালে সামরিক সরকারের সময় জারি করা অধ্যাদেশ বলে ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কার্যাবলি সম্পাদন করা হতো।
সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর ৫ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনটি উত্থাপন করা হলে তা নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়। তবে তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির ভূমি অধিগ্রহণের আওতামুক্ত রাখা হয়। পরে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে ওই তিন জেলার ভূমি অধিগ্রহণের বিধান আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এখন থেকে অন্য ৬১ জেলার ভূমির মতো ওই তিন জেলার ভূমিও অধিগ্রহণ করা যাবে।
অন্য কোনো স্থাপনা কিংবা উদ্যান, গাছ-গাছালি সমৃদ্ধ কোনো বনভূমি অধিগ্রহণ করা যাবে। দেশে স্থাবর সম্পত্তি হুকুমদখল ও অধিগ্রহণের জন্য কোনো আইন ছিল না। ফলে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় এক-একটি প্রকল্পের জন্য একটি করে নতুন আইন প্রণয়ন করতে হয়েছে। উদাহরণ দিয়ে এক কর্মকর্তা জানান, পদ্মা সেতু, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং পায়রা বন্দরের জন্য পৃথক তিনটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
সূত্র: জাগোনিউজ।