সোয়েব সাঈদ:
রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের অতিদূর্গম ও দরিদ্র জনগোষ্ঠি অধ্যুষিত অঞ্চলে ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ঘিলাতলী আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গৃহটি ঘূর্ণিঝড় মোরায় সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীরা।
শনিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের একমাত্র গৃহটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোরা’র কবলে বিধ্বস্ত হয়ে মাটির সাথে একাকার হয়ে গেছে।
ঘিলাতলী আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খালেদ জানিয়েছেন, বিদ্যালয়টি বিধ্বস্ত হওয়ায় বিদ্যালয় ভবন যেমন পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তেমনি বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে রক্ষিত কাগজপত্র, শ্রেণি কক্ষগুলোর সবকটি বেঞ্চ তছনছ হয়ে গেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে কিভাবে শ্রেণি কার্যক্রম চালাবেন তা নিয়ে সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েছে। এড়াছা দ্রুত বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ না হলে আসন্ন সাময়িক পরীক্ষা নেয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কবির আহমদ জানান, এখনো কোন জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ বিদ্যালয়টি বিধ্বস্ত বিদ্যালয়টি দেখতে আসেনি। তাই এলাকাবাসী আরো বেশী উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। তাদের দাবি এলাকাটি দূর্গম হওয়ায় কেউ খোঁজ নিচ্ছেন না। তারা এলাকার কচিকাঁচা শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে বিদ্যালয় ভবনটি অবিলম্বে সংস্কারের জন্য রামু-কক্সবাজার আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা প্রশাসক আলী হোসেন সহ সকলের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
রামু-কক্সবাজার আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল জানিয়েছেন, বিদ্যালয়টি বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
প্রধান শিক্ষক আরো জানান, বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত দুই শিফটে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় আড়াই শতাধিক। ২০১০ সাল থেকে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আসছে। ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য এ বিদ্যালয়ের ১৮ জন ছাত্রছাত্রীকে ডিআর দেয়া হয়েছে।
অতিদূর্গম ও দরিদ্র জনগোষ্ঠি অধ্যুষিত অঞ্চলে ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ঘিলাতলী আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোন সরকারি সহায়তা ছাড়াই চলে বিদ্যালয়ের পাঠদান। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৪জন শিক্ষক প্রায় ১যুগ ধরে বিনাবেতনে পাঠদান করে যাচ্ছেন।
২০১০ সাল থেকে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। আর প্রতি বছর এসব পরীক্ষায় পাসের হার ১০০ ভাগ। এলাকার শিক্ষা পাগল মানুষ কেবল বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছেন তা নয়, বিদ্যালয়ের জন্য ক্রয় করা ৩৩ শতক জমিও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালকের নামে নামজারি করেছেন।
তবে এলাকাবাসীর দুঃখ, জাতীয়করণের জন্য বিদ্যালয়টি সর্বক্ষেত্রে যোগ্যতার দাবি রাখলেও এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। যার ফলে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যালয় ভবন বিধ্বস্ত হওয়ায় এলাকাবাসী চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন।