আলাউদ্দিন, লোহাগাড়া, আমাদের রামু ডটকম:
ভাবছিলাম অনেক দিন ধরে লেখব কিন্তু মা’র অপরশনের পর থেকে কিছু পারিবারিক টেনশন থাকায় লেখা হয়নি । রমজান শুরুর এক সপ্তাহের মাঝামাঝি মা অসাবধানবশত বাড়িতে পড়ে পায়ের হাঁড় ভেঙ্গে পেলে ।
মাকে স্থানীয় লোহাগাড়া জেনারেল হাসপাতালে ডা: তারেক আহমদের কাছে নিয়ে যাই। সেখানে প্রাথমিক চিকিত্সা দিয়ে পরদিন মা কে নিয়ে চলে গেলাম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে । জীবনে প্রথম বার কোন রোগীকে নিয়ে চমেকে গেলাম । ২৬ নং মহিলা ওয়ার্ডে মাকে ভর্তি দিল । সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় ২৬ নং ওয়ার্ডের নিচ তালায় বারান্দায় কয়েজন পঙ্গু রোগী দেখতে পাই । তাদের পাশে কেউ নেই । একা বসে যেন তারা কিছু ভাবতেছেন । জরুরী কাজে প্রায় সময় নিচে- উপরে আসা যাওয়ার সময় দেখতাম তাদের । তাদের দেখে খুব চিন্তা লাগত। ভাবলাম তাদের নিয়ে একটা ফিচার লেখা যেতে পারে ।
পরদিন সকালে ফেসবুক বন্ধু আরিফুল ইসলাম চৌধুরীকে সাথে নিয়ে কথা বলতে চেষ্টা করলাম তাদের সাথে ।কথা হল এক বৃদ্ধার সাথে বয়স প্রায় ৬০ এর কাছাকাছি মুখে সাদা দাড়ি আছে ।
নামটা ঠিক মনে নাই । বাড়ি নাকি হাটাজারিতে । জানতে চাইলাম দূর্ঘটনা কিভাবে হল । ওই বৃদ্ধা জানান ৫/৬ মাসের বেশি সময় আগে হাটাজারিতে রাস্তা পারাপারের সময় বাস দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন । এরপর কে বা কারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করে দিয়ে চলে যায় । দুর্ঘটনায় তার একটি পায়ের হাড় ভেঙ্গে যায় । পুরো পা’টি সাদা ব্যান্ডিজে মোড়ানো । কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম পরিবারের কেউ আছে কিনা । বৃদ্ধা জানান তার কেউ নেই । তিনি শুধু একা।
গায়ে পরনে একটা লুঙ্গী ছাড়া আর কিছু নেই । যে বেডে শুয়ে আছেন তাও তালিজোড়ার বেড। হাসপাতালে কতৃক যা দেয় তা খেয়ে কোন রকম বেচেঁ আছেন । তখন তীব্র গরম পড়ছিল । গরম সহ্য করতে না পেরে ছটফট করছেন। এসব চিত্র দেখে বন্ধু আরিফুল ইসলাম বলে উঠল ইস! অভিভাবক না থাকায় আজ তাদের এই অবস্থা। আমার কলেজ বন্ধুদের বলে দেখি তাদের জন্য কিছু করতে পারি কিনা। এছাড়াও ২৬নং ওয়ার্ডে রোগী বেশি থাকে তাছাড়া অভিভাবক না থাকায় তাদের স্থান বারান্দায় হয়েছে । (চলবে)