কামাল শিশির, ঈদগড় :
কক্সবাজার রামুর ঈদগড়ে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ঈদগড়ের বিভিন্ন হোটেলে, চায়ের দোকান, ইট-পাথর ভাঙ্গা, ওয়েল্ডিং কারখানা ছাড়াও রিক্সা ভ্যান চালানোর মত কঠিন শ্রমে নিয়োজিত রয়েছে প্রায় অনেক শিশু। এই এসব শিশুর বয়স ১২/১৩ বছর। এই বয়সে শিশুর হাতে থাকার কথা ছিল বই, খাতা, কলম। কিন্তু নিয়তি এবং আইন না মানার প্রবণতার কারণে স্কুলে যাওয়া-আসা এবং খেলাধুলা থেকে দুরে পড়ে আছে এই সব শিশুরা। তবে শিশুদেরকে কঠিন শ্রমে নিয়োজিত করার পেছনে রয়েছে সংসারের অস্বচ্ছলতা। কারো কারো অভিভাবক না থাকা এবং অসচেতনতা ও নিরক্ষরতা। ভ্যান চালক শিশু চরপাড়া এলাকার তারেক জানান, সংসারের অস্বচ্ছলতার কারণে স্কুল বাদ দিয়ে তাকে ভ্যান চালাতে হচ্ছে।
এলাকার আরো কয়েকজন শিশু শ্রমিক মহিম উদ্দীন, ফারুক, আরফাত, ইয়াছিন জানান, সারাদিন শ্রম দিলেও দৈনিক ৫০/৬০ টাকার চেয়ে বেশি বেতন পায়না। অন্যদিকে মালিকের বকাঝকা অনেক হজম করতে হয়। অনেক সময় শিশু শ্রমিকদেরকে মালিকের মার খেতে হয় বলেও জানান শিশু শ্রমিকরা। এছাড়াও কোন আসবাব পত্র ভেঙ্গে গেলে তার ক্ষতিপূরণ কেটে নেয় মালিকরা। একদিকে পিতা-মাতার আদর সোহাগ থেকে বঞ্চিত অন্যদিকে শ্রম মালিকদের বকুনী খেয়ে শিশুদের মনটা সর্বদা ভাল থাকেনা বলে জানা যায়।
শ্রম মালিকদের এহেন কর্মকান্ডে অভিভাবকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এভাবে চলতে থাকলে শিশুরা বাধ্যতামুলক প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে এমন ধারনা করছেন এলাকার সচেতন মহল। বিশেষ জরীপে জানা যায়, বৃহত্তর ঈদগড়ে প্রায় শতাধিক শিশু এসব শ্রমে নিয়োজিত থাকায় তারা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ঈদগড় হাসনাকাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুদ্দীন জানান, অভিভাবকদের গাফলতি এবং অভাব-অনটনের কারণে শিশুরা শিক্ষার পরিবর্তে শিশু শ্রমে নিয়োজিত হচ্ছে।