গত কয়েক বছরের মতো এবারও এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার বাড়লেও আরও ভাল ফল প্রত্যাশা করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
এবারের এসএসসির ফলাফলে ‘অসন্তুষ্ট’ না হলেও আরও বেশি খুশির উপলক্ষ্য হতে পারে এমন ফল দেখতে চান তিনি।
বুধবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের অনুলিপি তুলে দিয়ে দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রী।
মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন, যাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ জন।
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ বলেন, “আমরা খুশি আছি কিন্তু আমরা অনেক বেশি খুশি হতে চাই। সবাই যেন ভাল করতে পারে সেই চেষ্টাই আমরা করে যাচ্ছি।”
এবারের সার্বিক ফলাফলে সন্তুষ্ট কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “আমরা অসন্তুষ্ট নই, কিন্তু আমরা আরও ভালো চাই। আমাদের ছেলেমেয়েরা আরও ভাল করুক। আমি অসন্তুষ্ট একথা মোটেই বলব না।”
উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক-অভিভাবকদেরও অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, “যারা পাস করতে পারেনি তাদের প্রতি আমার আহ্বান তারা যেন হতাশ না হয়। পরীক্ষায় পাস-ফেল করা অনেক সময় নানা বিষয়ের উপর নির্ভর করে। আমরা আশা করব ভবিষ্যতে তারা ভালো প্রস্তুতি নিয়ে ভাল ফল করবে।”
পরীক্ষা শুরুর আগেই নৈর্ব্যক্তিক (এমসিকিউ) প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় নাহিদ আগামী বছর থেকে এমসিকিউ অংশের প্রশ্ন থেকে ১০ নম্বর কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
তিনি বলেন, “আগে পরীক্ষার শেষে এমসিকিউ নেওয়া হলেও এবার থেকে শুরুতে এমসিকিউ অংশের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
“নকলের প্রবণতা আমরা কমিয়ে নিয়ে আসছি। প্রশ্ন ফাঁস হওয়াও এখন আর সম্ভব নয়। আমাদের পরীক্ষাগুলোর উন্নতি হয়েছে। বলছি না একেবারে পারফেক্ট হয়ে গেছে।”
বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডে পাসের হারে হেরফেরের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “শিক্ষার্থীরা যেভাবে পরীক্ষা দিয়েছে সেভাবেই মূল্যায়িত হয়েছে। তবে প্রত্যেক বোর্ড ফলাফল মূল্যায়ন করবে। … নম্বর দেওয়ার উপর আমাদের কোনো হাত নেই।”
এর আগে যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করতে পারেনি সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং এর ফলও পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান নাহিদ।
যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাল ফল হয়নি সেগুলোকে চিহ্নিত করে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “ইংরেজি ও গণিতের জন্য আলাদা করে আট হাজার স্কুলে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। ১১ লাখ অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।
“ঘাটতি পূরণের যে প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে তার ফলও আমরা পাচ্ছি। এবারের ফল বিশ্লেষণ করে দেখব, এরপর মূল্যায়ন করে ব্যবস্থা নেব।”
ঘোষণা অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যেই এসএসসির ফল ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
গণিতে সৃজনশীল পদ্ধতি চালুর বিষয়ে নাহিদ বলেন, শিক্ষাবিদসহ বিভিন্নজনের পরামর্শ নিয়েই সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। সব কিছুর ক্ষেত্রেই প্রথমটা কষ্টকর।
শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
[বিডিনিউজ]