অনলাইন ডেস্কঃ
বিএনপির বাইরে আওয়ামী লীগবিরোধী অবস্থান নিয়ে কামাল হোসেন ও বি চৌধুরীর জোটবদ্ধ হওয়াকে স্বাগত জানিয়ে তাদের সহযোগিতাও করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “একটা জোট হচ্ছে, আমি খুশি। তাদের এজন্য যা যা সহযোগিতা লাগবে, আমি তাও করতে রাজি। আমার কথা, শত ফুল ফুটতে দেন।”
জাতিসংঘের এবারের অধিবেশন থেকে ফেরা প্রধানমন্ত্রী বুধবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ভোটের আগে নতুন জোট নিয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানান।
তবে নতুন জোট কিংবা বিএনপির দাবি অনুযায়ী নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া কিংবা সরকারের পদত্যাগের সম্ভাবনা নাকচ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আবারও স্পষ্ট করেছেন, বিএনপি কিংবা কোনো দলকে নির্বাচনে আনতে তিনি কোনো উদ্যোগ নেবেন না।
বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের বর্জনের মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনের পথে এগোচ্ছে।
বিএনপি নির্বাচনের সময় সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগের দাবি এবারও তুলেছে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবিও রয়েছে তাদের।
বিএনপির সমরূপ দাবি তুলেছেন সম্প্রতি জোট বাঁধা কামাল হোসেন ও এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীও।
তাদের জোটকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “বাংলাদেশে ভোট আছে দুইটি। একটা আওয়ামী লীগ, আরেকটা অ্যান্টি আওয়ামী লীগ। এই অ্যান্টি আওয়ামী লীগ ভোটটা তো একটা জায়গায় যেতে হবে।”
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়াকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও তারা তা করেনি জানিয়ে শেখ হাসিনা সহযোগিতার অংশ হিসেবে তাদের জনসমাগম করিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন।
আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের প্রত্যাশা রেখে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন চায়। এখানে এত দল.. কোন দল আসবে, আর কোন দল আসবে না; সেটা হচ্ছে তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। তাদের সিদ্ধান্ত তো আমি নিতে পারি না। এটা তাদের নিতে হবে।
“নির্বাচনে আসবে কিনা বা করবে কি না বা করতে পারবেন কি না বা সেই সাহস তাদের আছে কি না, সেটাও একটা প্রশ্ন।”
ভোটের আগে সরকারের পদত্যাগের দাবি নাকচ করে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রায় ১০ বছর আমরা ক্ষমতায়। অন্যায়টা আমরা কী করেছি যে আমাদেরকে এখনই রিজাইন দিতে হবে। এই সরকার ফেলে দিতে হবে বা সরকারের বদনাম করতে হবে।
“তারপরও এখনও যারা বসে থাকে যে, সরকার চলে যাবে। এমন কেউ আসবে, যারা এসে যাদের চাল নেই চুলো নেই, কিছু নেই, সংগঠনও করতে পারবে না, ভোটও চাইবে না, তাদের ক্ষমতায় আনবে।”
বাংলাদেশকে ‘ষড়যন্ত্রের উর্বর ভূমি’ আখ্যায়িত করে যে কোনো ষড়যন্ত্র ঠেকাতে জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।
তিনি বলেন, “ভোটে যাওয়ার সাহস নাই, কিন্তু পতাকা চায়। আর সেই পতাকা দেবে কে? অবৈধ কোনো ক্ষমতা দখলকারী, মার্শাল ল, মিলিটারি শাসন, ইমারজেন্সির পথে। ব্যক্তি স্বার্থ এবং নিজেদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের অপচেষ্টা সব সময় আছে তাদের।”
নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষে নিজের অবস্থান আরও স্পষ্ট করেন শেখ হাসিনা।
বিএনপির বিরোধিতা উপেক্ষ করে একাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির মধ্যে বড় পরিসরে ইভিএম ব্যবহারে একটি প্রকল্প পাস করেছে সরকার। সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য নির্বাচনী আইন সংশোধনেরও প্রক্রিয়াও চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি কিন্তু ইভিএমের পক্ষে। ইভিএমের জন্য আমরা একনেকে প্রজেক্ট পাস করে দিয়েছি। যেহেতু, প্রজেক্ট পাস করেছি, বুঝতেই পারেন, আমাদের মানসিকতা কী। আমরা তো চাই।”
আগামী নির্বাচনেও জয়ের আশা রেখে তিনি বলেন, “অনেক কষ্ট করে তো আমরা গণতন্ত্রটা ফিরিয়ে এনেছি। গণতন্ত্রের ধারাটা অব্যাহত থাকবে, উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত থাকবে; সেটাই তো মানুষ চায়।
“নৌকায় ভোট দিলে উন্নয়নটা অব্যাহত থাকে। নৌকা ছাড়া কেউ উন্নয়নটা করবে না।”
সূত্রঃ বিডিনিউজ