অনলাইন ডেস্কঃ
বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণে বছরে ২ লাখ ৩৪ হাজার মানুষ মারা যায়। এ সংখ্যা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের ১০ গুণ। পরিবেশ দূষণে মানুষের আর্থিক ক্ষতি হয় ৫৪ হাজার কোটি টাকার। অন্যদিকে বায়ুদূষণে বছরে ১ লাখ ৭৫ হাজার ১৪০ জন মারা যায়। এটা এক দশক আগের তুলনায় ১১ গুণেরও বেশি।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এ তথ্য প্রকাশ করে। সংস্থাটি বলছে, পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পরিবেশ আইনের যথাযথ সংশোধন ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনে বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন, যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, শরীফ জামিল, অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার, শাহজাহান মৃধা বেণু প্রমুখ।
অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ বলেন, দূষণ আমাদের চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে। ইটভাটা, পুরনো গাড়ি, পানি, বায়ু ও শব্দদূষণ মানুষের বেঁচে থাকার স্বাভাবিক পরিবেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। কার্বনের মতো বিষাক্ত গ্যাস আমরা প্রতিনিয়ত গ্রহণ করছি। ঢাকা শহরে একদিক থেকে বাতাস ঢুকে অন্যদিক দিয়ে বের হতে পারে না। কারণ সরু রাস্তা ও বহুতল ভবন। এর ফলে বিষাক্ত গ্যাস, ধুলা, বালুযুক্ত বাতাস ঘুরেফিরে মানুষের শরীরেই প্রবেশ করছে। সরকার ২০ বছরের পুরনো আইন দিয়েই বর্তমান পরিবেশ নীতি পরিচালনা করছে। পরিবেশ আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী আইন করতে হবে।
সিরাজুল ইসলাম মোল্লা সাম্প্রতিককালের বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষার কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণ জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলেছে। প্রায় এক দশক আগে বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছিল যে, বাংলাদেশে তখন বছরে ১৫ হাজার মানুষ বায়ুদূষণজনিত কারণে মারা যেত। সেই বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেল যে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণজনিত কারণে ২ লাখ ৩৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ হাজার মানুষ মারা গেছে শহর এলাকায়।
মিহির বিশ্বাস বলেন, ঢাকা শহরের প্রায় সব রাস্তাই বর্তমানে গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে। আহম্মেদ কামরুজ্জামান বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষার কথা উল্লেখ করে বলেন, পরিবেশ দূষণে বছরে ৫৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। তিনি এখনই এই দূষণের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আইনের যথাযথ সংশোধন ও তা বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।