লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
মনোরোগের চিকিৎসায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ওজন নিয়ন্ত্রণ।
‘বাইপোলার ডিজঅর্ডার’ হল এক ধরনের হতাশাজনীত বাতিকগ্রস্ত রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি কখনও প্রচণ্ড হতাশ হয়ে পড়েন আবার কিছুক্ষণের জন্য হাসিখুশি হয়ে ওঠেন।
এই রোগের চিকিৎসায় উপকারী ভূমিকা পালন করতে পারে স্বাস্থ্যকর ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস। এই খাদ্যাভ্যাস হওয়া চাই ফলমূল ও শাকসবজি সমৃদ্ধ।
অস্ট্রেলিয়ার ডেকিন ইউনিভার্সিটির গবেষণায় এমন ফলাফলই পাওয়া গিয়েছে।
প্রধান গবেষক, মেলানি অ্যাশটন বলেন, “আমরা দেখেছি, যারা নিম্নমানের খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত তাদের তুলনায় যারা ভালোমানের খ্যাদ্যাভ্যাস মেনে চলেন, যেখানে প্রদাহরোধী উপাদান রয়েছে কিংবা যাদের ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’য়ের মাত্রা কম, তারা এই রোগের জন্য প্রযোজ্য ‘নিউট্রাসিউটিক্যাল’ চিকিৎসায় ভালো উপকার পেয়েছেন।”
বার্সেলোনার ‘ইসিএনপি’ সম্মেলনে উপস্থাপিত এই গবেষণার ফলাফল থেকে আরও জানানো হয়, যেহেতু এই রোগের দুই উপসর্গ একে অপরের বিপরীত, তাই এর জন্য একটি কার্যকর চিকিৎসা বের করা দুষ্কর।
বর্তমানে যেসব ওষুধ পাওয়া যায় তা এই রোগে আক্রান্ত মানুষদের অতিরিক্ত হাসিখুশি পর্যায় নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। কিন্তু হতাশাগ্রস্ত পর্যায় মোকাবেলায় কার্যকর কোনো চিকিৎসা নেই।
এই গবেষণার জন্য ১৩৩ জনকে পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা। এদের কেউ হয়ত ‘নিউট্রাসিউটিক্যালস’ ব্যবহার করেছেন, নতুবা সঙ্গে যোগ করছেন প্রদাগরোধী অ্যামিনো অ্যাসিড ‘এন-অ্যাসিটাইলসিস্টেইন (এনএসি), কেউ শুধু ‘এনএসি’ গ্রহণ করেছে কিংবা নকল ওষুধ খেয়েছেন।
‘নিউট্রাসিউটিক্যালস’ হল খাবার থেকে উৎপন্ন উপাদান যেমন ভিটামিন ও খনিজ যা এই রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিষেধনে সাহায্য করে।
গবেষক দলটি পর্যবেক্ষণ শুরুর আগে প্রত্যেকের ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’য়ের মাত্রা পরিমাপ করেন। এরপর মাপা হয় তাদের হতাশার মাত্রা এবং ওই মানুষটি তার দৈনন্দিন জীবন কীভাবে পার করেন তা জানা হয়।
এক বছর ধরে কী ধরনের খাবার খাচ্ছেন তা জেনে নেওয়া হয় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে। এর মাধ্যমে গবেষকরা ব্যক্তি ভেদে তার খাদ্যাভ্যাসের মান কতটা স্বাস্থ্যকর ও উন্নত সেটা নির্ণয় করেন।
খাদ্যাভ্যাসে প্রচুর পরিমাণে ফল ও সবজি থাকলে তা স্বাস্থ্যকর। আর ‘স্যাচুরেইটেড’ চর্বি, প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট এবং অ্যালকোহলের মাত্রা বেশি থাকার মানে হল নিম্নমানের খাদ্যাভ্যাস।
অ্যাশটন বলেন, “আমরা এই গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হতে পারলে ‘বাইপোলার ডিজঅর্ডার’য়ে আক্রান্ত রোগীদের জন্য অত্যন্ত ভালো সংবাদ হবে। কারণ, এই রোগের কার্যকর চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি।”