অনলাইন ডেস্কঃ
সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য দিনে যে পরিমাণ শারীরিক কর্মকাণ্ড করতে হয়, তা বাংলাদেশের প্রতি পাঁচটি শিশুর মধ্যে তিনটিই করছে না বলে একটি সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি অ্যান্ড হেলথ সাময়িকীতে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাত দিনের এই সমীক্ষা চলাকালে ১৩ থেকে ১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের মাত্র ৪১ দশমিক ৪ শতাংশকে প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে।
শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের জন্য প্রতি দিন এই পরিমাণ শারীরিক কর্মকাণ্ড করা উচিত বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও পরামর্শ রয়েছে।
গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ায় ‘২০১৮ বাংলাদেশ রিপোর্ট কার্ড অন ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি ফর চিলড্রেন অ্যান্ড ইয়ুথ’ শিরোনামে সমীক্ষা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এই প্রথম শিশুদের জীবনাচরণ নিয়ে বৈশ্বিক গবেষণায় বাংলাদেশের শিশু ও তরুণদের বিষয়টিও উঠে এসেছে।
সমীক্ষা প্রতিবেদনের লেখকরা বলছেন, শিশু-তরুণদের এই জীবনাচরণ জনগণের স্বাস্থ্য সমস্যায় ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে এবং বাংলাদেশে বিষয়টিকে অগ্রাধিকারের তালিকায় নেওয়া জরুরি।
এই প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে এ বিষয়ে সচেনতনতা, সোচ্চার হওয়া, সহায়ক পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা। এগুলো করা হলে অভ্যাসের পরিবর্তনের মাধ্যমে শিশু-তরুণদের শারীরিক কর্মকাণ্ড তাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠবে বলে মনে করেন তারা।
যাতায়াতে শারীরিক পরিশ্রম, স্কুলে স্কুলে খেলাধুলার আয়োজন, এলাকায় খেলাধুলার ব্যবস্থা, জাতীয়ভাবে শারীরিক কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
গবেষক দলের প্রধান আসাদ খান বলেন, এগুলোর পাশাপাশি অ্যাক্টিভ লাইফস্টাইল নিয়ে একটি জাতীয় নীতি প্রণয়ন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়নের উদ্যোগ ও তদারকিও গুরুত্বপূর্ণ।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক আসাদ খান ‘অ্যাক্টিভ হেলদি কিডস বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান। এই সংগঠনই অ্যাক্টিভ হেলদি কিডস গ্লোবাল অ্যালায়েন্সের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের শিশুদের নিয়ে ওই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
তাদের প্রতিবেদনের সারাংশই ‘ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি অ্যান্ড হেলথ’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
শারীরিকভাবে সক্রিয় হওয়া শুধু ইচ্ছার বিষয় নয়, তা জীবনের জন্যই প্রয়োজন।
অ্যাক্টিভ হেলদি কিডস গ্লোবাল অ্যালায়েন্সের সভাপতি মার্ক ট্রেম্বলে এক বিবৃতিতে বলেছেন, শারীরিকভাবে সক্রিয় না থাকা শিশুরা শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সমস্যায় পড়ার ঝুঁকিতে থাকে। সে কারণে সবাইকে এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।
“এই প্রজন্মকে বহু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্বায়ন এবং দ্রুত প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে তাদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে। তাই তাদের স্বাস্থ্যবান ও ভিন্ন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে সক্ষম হওয়ার জন্য শারীরিকভাবে সক্রিয় হতে হবে, যাতে তারা পরিবর্তনশীল বিশ্বে টিকে থাকতে ও সফল হতে পারে।”
সূত্রঃ বিডিনিউজ