অনলাইন ডেস্কঃ
বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস পলাতক থাকায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও অফিস নথি উদ্ধার করতে অধ্যক্ষের আলমারি ও লকার ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ঢাকা জেলা প্রশাসনের একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তালা ভাঙা হবে। গত বুধবার থেকে পলাতক রয়েছেন নাজনীন ফেরদৌস।
এদিকে, নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি আত্মহননের ঘটনার পর নতুন বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নতুন পূর্ণকালীন একজন অধ্যক্ষ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ পর্ষদ।
এ জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) পরিচালনা পর্ষদের সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে স্থগিত হওয়া ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম কবে থেকে শুরু করা হবে সে বিষয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই বিদ্যালয়ের প্রতিটি শাখায় একজন করে পূর্ণকালীন মনোবিদ (সাইকোলজিস্ট) নিয়োগ করার বিষয়েও নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। ১৩ ডিসেম্বরের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
এ ছাড়া, বিদ্যালয়ের প্রতিটি শাখায় একটি করে অভিযোগ বাক্স স্থাপন করা হবে। ছাত্রী এবং অভিভাবকরা সেখানে তাদের অভিযোগ-অনুযোগের কথা জানাতে পারবেন।
পরিচালনা পর্ষদের একটি সূত্র সমকালকে জানায়, প্রতিষ্ঠানটির বসুন্ধরা শাখায় কলেজ (একাদশ ও দ্বাদশ) খোলা হলেও তা অবৈধ। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো পূর্বানুমতি নেই। তাই বসুন্ধরা শাখার নবম, দশম ও একাদশ শ্রেণির অনুমোদন চেয়ে শিগগিরই মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম আশরাফ তালুকদার সোমবার সমকালকে বলেন, নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্ব নিলেও তাকে আমরা এখনও কাগজপত্র বুঝিয়ে দিতে পারিনি। এ জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার তালা ভাঙা হবে।
তিনি বলেন, শিগগিরই তারা বিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসসহ ধানমণ্ডি, বসুন্ধরা ও আজিমপুর শাখায় একজন করে কাউন্সেলর (সাইকোলজিস্ট) নিয়োগ দেবেন। তিনি বলেন, ছাত্রীদের আন্দোলন থেকেই এ দাবিটি এসেছে। তারা তা পূরণ করতে পদক্ষেপ নিয়েছেন।
খোলা হচ্ছে অভিযোগ বাক্স: ছাত্রী ও অভিভাবকদের সমস্যা ও সংকট শোনার জন্য খোলা হচ্ছে অভিযোগ বাক্স। দু-একদিনের মধ্যেই তা চালু হবে। এ তথ্য জানিয়ে সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার বলেন, সেখানে ছাত্রী ও অভিভাবকরা প্রতিদিন তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন। অধ্যক্ষ নিজে সে বাক্স খুলে প্রতিদিন অভিযোগগুলো জানবেন। যেগুলো সমাধানের এখতিয়ার অধ্যক্ষের এককভাবে রয়েছে, সেগুলো তিনি তাৎক্ষণিক সমাধান করে দেবেন। বাকিগুলো পরিচালনা পর্ষদের নজরে আনবেন।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রির আত্মহননের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও শাখা প্রধান (শিফট ইনচার্জ) অভিভাবকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান না এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সদাচরণ করেন না। হঠাৎ সাক্ষাতের সুযোগ হলেও তারা অভিভাবকদের সঙ্গে চরম অশোভন আচরণ করেন বলে তদন্তকালে অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেন। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সঙ্গে কোনো বিষয়ে কাউন্সেলিং বা মতবিনিময় না করে কথায় কথায় টিসি দেওয়ার ভয় দেখান।