লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
কম মানসিক চাপের কাজ যারা করেন তাদের চাইতে শতকরা ২২ ভাগ বেশি স্ট্রোকের ঝুঁকিতে থাকেন যারা অতিরিক্ত মানসিক চাপযুক্ত কাজ করেন।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এরকমই ফলাফল পাওয়া গেছে।
গবেষকরা বলেন, “যারা সেবাদাতা হিসেবে কাজ করছেন, যেমন রেস্তোরাঁর পরিচারক এবং নার্স এদের কাজের চাপ অত্যন্ত বেশি এবং কাজের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ কম। বিজ্ঞানী, স্থপতি ইত্যাদি পেশার মানুষগুলো, যারা কর্মক্ষেত্রে বেশ মর্যাদা পান এবং কাজের উপর বাড়তি নিয়ন্ত্রণ উপভোগ করেন, তাদের তুলনায় সেবাদাতা পেশার মানুষগুলো কাজ নিয়ে অনেক বেশি মানসিক চাপে থাকেন।
গবেষণার জ্যেষ্ঠ লেখক, চীনের গোয়ানজো সাউদার্ন মেডিকল ইউনিভার্সিটির দিংলি শি বলেন, “বাড়তি মানসিক চাপযুক্ত কাজ আরও অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস যেমন, ধূমপান, শরীরচর্চা না করা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদির দিকে নিয়ে যেতে পারে।”
এই গবেষণায় কাজের দুশ্চিন্তা এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি সম্পর্কিত ছয়টি গবেষণা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। যার মধ্যে মোট ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৮২ জন অংশগ্রহণকারীর উপর তিন থেকে ১৭ বছর ধরে বিশ্লেষণ করা হয়।
কাজের উপর কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের কতটা পরিশ্রম করতে হয় বা কাজটার মানসিক চাহিদা কতটুকু তার উপর ভিত্তি করে কাজকে চারভাগে ভাগ করেন গবেষকরা।
কাজের চাহিদার মধ্যে আছে সময়ের চাপ, মানসিক চাপ এবং কাজের সমন্বয়ের বাধা। শারীরিক পরিশ্রম এবং মোট কর্মঘণ্টা এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
মানসিক চাপ কম এমন কাজ হল চাহিদা কম এবং নিয়ন্ত্রণ বেশি এমন কাজগুলো। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে পরিবেশ বিজ্ঞানী বা স্থপতিদের কাজের কথা।
গবেষকরা বলেন, “অতিরিক্ত মানসিক চাপযুক্ত কাজগুলো, যার চাহিদা বেশি এবং নিয়ন্ত্রণ কম সেগুলো সেবাদাতা পেশাতেই দেখা যায়। যেমন, ওয়েইট্রেসেস এবং নার্সিং সেবা ইত্যাদি।”
নিষ্ক্রিয় কাজ হল সেগুলো যেখানে চাহিদা এবং নিয়ন্ত্রণ দুটোই কম। যেমন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, শ্রমিক। ক্রিয়াশীল কাজে চাহিদা এবং নিয়ন্ত্রণ দুটোই বেশি। যেমন, ডাক্তার, শিক্ষক, প্রকৌশলী ইত্যাদি।
নিষ্ক্রিয় এবং ক্রিয়াশীল কাজে নিয়জিত কর্মীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে না, তবে অতিরিক্ত মানসিক চাপযুক্ত কাজে নিয়জিত কর্মীদের স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ার আশঙ্কা উল্লেখযোগ্য।
গবেষকরা আরও দেখতে পান, বাড়তি মানসিক চাপযুক্ত কাজে নিয়জিত পুরুষদের তুলনায় নারীদের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব বেশি।
গবেষকদের হিসাব অনুযায়ী ৪.৪ শতাংশ স্ট্রোকের কারণ হচ্ছে মানসিক চাপযুক্ত কাজ। নারীদের ক্ষেত্রে যা ৬.৫ শতাংশ।
আমেরিকান একাডেমি অফ নিউরোলজির চিকিৎসাবিষয়ক অনলাইন জার্নাল নিউরোলগ’য়ে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়।