লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহে সমস্যা দেখা দিলে কিংবা রক্ত প্রবাহ কমে গেলে ‘সেরিব্রো ভাস্কুলার ডিজিজ’ বা স্ট্রোক হয়।
মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক না থাকলে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ ব্যাহত হয়। ফলে মস্থিষ্কে কোষগুলো মারা যায়। যে কারও যে কোনো বয়সে স্ট্রোক হতে পারে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক, আমেরিকার ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় ও ল্যাকসেট নামক গবেষণা সাময়িকীর যৌথ গবেষণায় জানা যায়- স্ট্রোকে মৃত্যু হার বাংলাদেশে সবচাইতে বেশি। তাই স্ট্রোক সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করে তুলতে সোচ্চার হয়েছে বাংলাদেশ স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন।
২৯ অক্টোবর, বিশ্ব স্ট্রোক দিবসে বারডেম জেনারেল হাসপাতালে স্ট্রোক সম্পর্কে একটি সচেতনতামূলক সেমিনারেরও আয়োজন করেছিল প্রতিষ্ঠানটি।
স্ট্রোকের ধরণ
স্ট্রোক তিন ধরনের। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান এবং বাংলাদেশ স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. মেজর জেনারেল কেএম ওমর হাসান।
মাইল্ড স্ট্রোক: ডাক্তারি ভাষায় এর অপর নাম ‘ট্রান্সিয়েন্ট ইশকেমিক অ্যাটাক’। এক্ষেত্রে রোগীর মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে পুনরায় চালু হয়ে যায়। এ ধরনের স্ট্রোকের লক্ষণ চোখে পড়ে কম এবং সেরেও যায়। তবে এটি পরবর্তী সময়ে স্ট্রোকের সম্ভাবনাকে জোরদার করে। তাই একে বড় স্ট্রোকের পূর্বাভাস হিসেবে গণ্য করা হয়।
ইশকেমিক স্ট্রোক: মস্তিষ্কের রক্তনালীতে এই স্ট্রোক হয়। এক্ষেত্রে মস্তিষ্কের ও শরীরের অন্যান্য স্থানের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধে। পরে তা মস্তিষ্কের দিকে অগ্রসর হয়। ফলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি হয়। এই জমাট বাঁধা রক্ত মস্তিষ্কের রক্তনালীতে জমা হলেও ইশকেমিক স্ট্রোক হয়। অন্তত ৬০ শতাংশ স্ট্রোকই হয় ইশকেমিক স্ট্রোক।
হেমোরেজিক স্ট্রোক: মস্তিষ্কের রক্তনালী ছিঁড়ে গেলে হেমোরেজিক স্ট্রোক হয়। পাশাপাশি ছেঁড়া রক্তনালী থেকে বের হওয়া রক্ত মস্তিষ্কের অন্যান্য কোষগুলোর মারাত্বক ক্ষতি করে। এর প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ ও ব্রেইন অ্যানুরিজম। রক্তনালী দূর্বল বা পাতলা হয়ে যাওয়াকে অ্যানুরিজম বলে।
স্ট্রোকের কারণ
ডা. কেএম ওমর হাসান বলেন, “রক্তনালীর ভেতরের অংশে কোলেস্টেরল, চর্বি, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি জমে রক্ত চলাচলের সরু বা বন্ধ হয়ে গেলে এবং রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা কমে গেলে মস্তিষ্কের যে কোনো অংশে রক্ত সরবরাহ সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। রক্তনালী ছিঁড়ে গিলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণও হতে পারে। এটাই স্ট্রোকের প্রধান কারণ। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়বেটিস ও স্থূলতা স্ট্রোকের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।”
স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়
কিছু ভালো অভ্যাস স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে।
* ধূমপান ত্যাগ করা। * নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা। * অলস জীবনযাপন না করা। * মাদক ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা। * অধিক চর্বি ও কোলেস্টোরলযুক্ত খাবার কম খাওয়া। * খাবারে লবণ কম খাওয়া। * খাবারে শাকসবজির পরিমাণ বাড়ানো। * মাংস কম খাওয়া, মাছ বেশি খাওয়া।
সূত্রঃ বিডিনিউজ