ক্রীড়া ডেস্কঃ
মুখোমুখি দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকালেন, এক বল পর চার। দুইশ’র বেশি রান তাড়া করতে নেমে ‘ইউনিভার্স বস’ গেইলের কাছ থেকে এমন ঝড়ো শুরুরই প্রত্যাশা করেছিল কিংস এলেভেন পাঞ্জাব। কলকাতা নাইট রাইডার্সের ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেনসে গেইলের গড় ৬০ হওয়ায়, পাঞ্জাবের আশা বেড়ে যায় আরও বেশি।
কিন্তু এ দিনটি (মূলত রাত) ছিল না গেইল অথবা পাঞ্জাবের, ম্যাচের পুরোটা জুড়েই ছিলেন শুধু গেইলেরই স্বদেশি আন্দ্রে রাসেল। যিনি ব্যাট হাতে দলকে এনে দিয়েছেন আইপিএলে কলকাতার মাঠের সর্বোচ্চ রানের সংগ্রহ। পরে বল হাতেও ‘বিগ ফিশ’ ক্রিস গেইলের উইকেটসহ নিয়েছেন ২টি উইকেট।
রাসেলের এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের পর কলকাতা জিততে ব্যর্থ হলেই তা বেমানান দেখাত। শেষপর্যন্ত ২৮ রানের সহজ জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে তারা। কলকাতার করা ২১৮ রানের জবাবে পাঞ্জাবের ইনিংস থামে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯০ রানে।
২১৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নামা পাঞ্জাব প্রথম ধাক্কা খায় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লোকেশ রাহুলকে সাজঘরের টিকিট ধরিয়ে দেন লকি ফার্গুসন। তবু দমে যাননি গেইল। ইনিংসের প্রথম ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকানোর পর তার ব্যাট থেকে আসে আরও একটি করে চার ও ছক্কা।
সুনিল নারিনের স্পিনের বিপক্ষে বরাবরই দুর্বল গেইল, তবু তাকে আক্রমণে না এনে রাসেলের হাতে বল সঁপে দেন কলকাতার অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আক্রমণে এসে দ্বিতীয় বলেই গেইলকে সাজঘরে ফেরত পাঠান এ ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার। ১৩ বলে ২০ রান করেন গেইল।
ব্যর্থ হন চার নম্বরে নামা সরফরাজ খানও। তার ব্যাট থেকে আসে ১৩ বলে ১৩ রানের ইনিংস। চতুর্থ উইকেটে লড়াই করেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল এবং ডেভিড মিলার। দুজন মিলে গড়েন ৪৭ বলে ৭৪ রানের জুটি। কিন্তু ততক্ষণে ম্যাচ প্রায় কলকাতার হাতের মুঠোয়।
ইনিংসের ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাজঘরে ফেরার আগে ৬ চার এবং ১ ছক্কার মারে ৩৪ বলে ৫৮ রান করেন মায়াঙ্ক। পাঞ্জাবের ম্যাচ জিততে তখনও প্রয়োজন ২৮ বলে ৮৫ রান। অসাধ্য সাধনের প্রচেষ্টায় চতুর্থ উইকেটে ৫৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন মানদ্বীপ সিং এবং ডেভিড মিলার।
দক্ষিণ আফ্রিকান মিলারের ব্যাট থেকে আসে ৫ চার ও ৩ ছক্কার মারে ৪০ বলে ৫৯ রান, মানদ্বীপ অপরাজিত থাকেন ১৫ বলে ৩৪ রান করে। কলকাতার পক্ষে বল হাতে রাসেল ২টি এবং পিয়ুশ চাওলা ও লকি ফার্গুসন নেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে পাঞ্জাব। ওপেনার ক্রিস লিন ব্যর্থ হলেও (১০ বলে ১০) আরেক ওপেনার সুনিল নারিন ব্যাট হাতে ছোটখাটো একটা ঝড় তোলেন। ৯ বলে ১ চার আর ৩ ছক্কায় ২১ রান করেন ক্যারিবীয় এই অলরাউন্ডার। ৩৬ রানে তখন ২ উইকেট নেই কলকাতার।
তৃতীয় উইকেটে হাল ধরেন নীতিশ রানা আর রবিন উথাপ্পা। ১১০ রানের বড় জুটি গড়ার পথে দুজনই করেন ঝড়ো ব্যাটিং। ৩৪ বলে ২টি চার আর ৭টি ছক্কার মারে ৬৩ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন রানা।
এরপর উথাপ্পা দলকে এগিয়ে নিয়েছেন। তার সঙ্গে পরে যোগ দেন আন্দ্রে রাসেল। আগের ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের জয় কেড়ে নেয়া এই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার পাঞ্জাবের বিপক্ষেও খেলেছেন ১৭ বলে ৪৮ রানের (৩ চার, ৫ ছয়) রানের বিধ্বংসী ইনিংস।
৫০ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ইনিংসের শেষ পর্যন্ত উথাপ্পা অপরাজিত থাকেন ৬৭ রানে। পাঞ্জাবের পক্ষে একটি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ শামি, ভিলজয়েন, বরুণ চক্রবর্তী আর অ্যান্ড্রু টাই।