:
মিয়ানমারের কর্মকর্তারা দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে অভিহিত করতে পারবেন না। এই জনগোষ্ঠীর সদস্যদের অভিহিত করতে হবে ‘ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী’ বলে। দেশটির তথ্য মন্ত্রণলায় থেকে ‘রোহিঙ্গা‘ শব্দ ব্যবহারের এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষ দূতের মিয়ানমার সফরে যাওয়ার প্রাক্কালে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। এ বিষয়টি নিয়ে বুধবার শিরোনাম করেছে ব্রুনাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ব্রুনাই টাইমস।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মিয়ানমারে চলমান বিতর্ককে পাশ কাটানোর প্রচেষ্টা হিসেবেই এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংহি লির মিয়ানমার সফরকালে সরকারি কর্মকর্তারা যেন রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার না করেন, সেটা নিশ্চিত করতে চায় দেশটি।
এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, ইয়াংহি লির সফরে রোহিঙ্গা বা বাঙালি শব্দগুলো ব্যবহার করা হবে না। এর বদলে ‘ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী’ বলে অভিহিত করা হবে রোহিঙ্গা মুসলিমদের।
১৬ জুন তারিখে ইস্যু করা ওই চিঠিকে ‘গোপনীয়’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ওই চিঠিতে রাখাইন আদিবাসীদেরও ‘রাখাইন প্রদেশের বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী’ বলে অভিহিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গারা মূলত মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশেই বাস করে থাকেন। তাদের নাগরিকত্বের আবেদনের বেশিরভাগই বাতিল করে আসছে মিয়ানমার সরকার। রোহিঙ্গাদের নিয়ে চলমান এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগও জানিয়ে আসছে জাতিসংঘ। সোমবার জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের কারণ হতে পারে। এ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
অধিকার কর্মীরা ধারণা করেছিলেন, দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বে গঠিত নতুন সরকার রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনায় বসবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। রাখাইন প্রদেশে লাখ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে আটকে রয়েছেন। তাদের ওপর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার অধিকার থেকেও তাদের বড় একটি অংশই বঞ্চিত। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গারা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। এসব রোহিঙ্গারা বলপ্রয়োগপূর্বক গুম, বাছবিচারহীন গ্রেপ্তার ও আটক, নির্যাতন, জোরপূর্বক শ্রমের মতো সব ঘটনার শিকার বলে উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।
[রিপোর্ট বাংলা ট্রিবিউনের]