ক্রীড়া ডেস্কঃ
ভিয়ারিয়ালের মাঠে শুরুতেই দুই গোল করে জয়ের ধারা ধরে রাখার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বার্সেলোনা। কিন্তু দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানো প্রতিপক্ষের সামনে কোণঠাসা হয়ে পড়ে এরনেস্তো ভালভেরদের দল। বদলি নামা লিওনেল মেসি শেষ দিকে ব্যবধান কমিয়ে নতুন করে আশা জাগান। সমতা টানেন লুইস সুয়ারেস। শেষ পর্যন্ত জয়ের দেখা না মিললেও স্বস্তির এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
ভিয়ারিয়ালের মাঠে মঙ্গলবার রাতের রোমাঞ্চকর লড়াইটি ৪-৪ গোলে ড্র হয়। ডিসেম্বরে লিগের প্রথম পর্বে ঘরের মাঠে দলটিকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল বার্সেলোনা।
শিরোপা ধরে রাখার মিশনে দারুণ ছন্দে এগিয়ে চলা বার্সেলোনা ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো। তবে কৌতিনিয়োর পাস পেয়ে লুইস সুয়ারেসের কোনাকুনি শট পা বাড়িয়ে ঠেকান গোলরক্ষক। খানিক পর স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ভিসেন্তে ইবোরার শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।
দ্বাদশ মিনিটে দুই ব্রাজিলিয়ানের নৈপুণ্যে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ডান দিক দিয়ে রক্ষণ ভেঙে ডি-বক্সে ঢুকে গোলমুখে বল বাড়ান মালকম। অনায়াসে আলতো টোকায় গোলটি করেন কৌতিনিয়ো।
চার মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মালকম। আর্তুরো ভিদালের ক্রসে হেডে বল ঠিকানায় পাঠান এ মৌসুমের শুরুতে কাম্প নউয়ে যোগ দেওয়া এই মিডফিল্ডার।
খানিক পরই ব্যবধান আরও বাড়তে পারতো। তবে কৌতিনিয়োর চিপ শট পোস্টে বাধা পায়।
দু্ই গোলে এগিয়ে থাকার স্বস্তি অবশ্য বেশিক্ষণ থাকেনি বার্সেলোনার। খেলার ধারার বিপরীতে ২৩তম মিনিটে ব্যবধান কমান সামুয়েল। সতীর্থের থ্রু পাস পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে তার নেওয়া শট পোস্টে বাধা পায়। তবে ফিরতি বল কোনাকুনি শটে জালে পাঠান নাইজেরিয়ার এই মিডফিল্ডার।
দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে অসাধারণ এক গোলে ভিয়ারিয়ালকে সমতায় ফেরান তোকো একাম্বি। সতীর্থের থ্রু পাস ডান দিকের সাইডলাইনের উপর থেকে ধরে দ্রুত ছুটে ডি-বক্সে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন ক্যামেরুনের এই ফরোয়ার্ড। টের স্টেগেন একটু সামনে এগিয়ে থাকায় ঠেকানোর কোনো সুযোগই পাননি।
আক্রমণের ধার বাড়াতে ৬১তম মিনিটে কৌতিনিয়োকে তুলে মেসিকে মাঠে নামান কোচ। এর পরের মিনেটেই তৃতীয় গোল হজম করে তারা। বাঁ দিক থেকে সতীর্থের রক্ষণচেরা পাস ডি-বক্সে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ভিসেন্তে ইবোরা।
৮০তম মিনিটে আরেকটি প্রতি-আক্রমণে স্কোরলাইন ৪-২ করেন কার্লোস বাক্কা। মাঝমাঠের অনেক আগে থেকে সতীর্থের লম্বা করে বাড়ানো বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটিয়ে গোলটি করেন কলম্বিয়ার ফরোয়ার্ড।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে মেসির আরেকটি দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে গোল। হারের শঙ্কায় পড়ে যাওয়া বার্সেলোনা শিবিরে নতুন করে আশা জাগে। চলতি লিগে আর্জেন্টাইন তারকার এটি ষষ্ঠ ফ্রি-কিক গোল। আর আসরে সর্বোচ্চ গোলদাতার মোট গোল হলো ৩২টি।
আর যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে স্বাগতিকদের হতাশায় ডুবিয়ে স্কোরলাইন ৪-৪ করেন সুয়ারেস। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ফাঁকায় পেয়ে নিচু জোরালো শটে জালে পাঠান উরুগুয়ের স্ট্রাইকার।
৩০ ম্যাচে ২১ জয় ও সাত ড্রয়ে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার পয়েন্ট ৭০।
দিনের প্রথম ম্যাচে জিরোনাকে ২-০ গোলে হারানো আতলেতিকো মাদ্রিদ ৮ পয়েন্ট কম নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদ ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিন নম্বরে।