অনলাইন ডেস্কঃ
বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ছাড়া মোবাইল সিম বিক্রি, অসত্য তথ্য দিয়ে নিবন্ধন এবং আগে থেকে চালু (প্রি-অ্যাক্টিভেটেড) সিম বিক্রি করা হলে প্রতিটি সিমের জন্য অপারেটরকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
এ বিষয়ে একটি নির্দেশনাও সম্প্রতি মোবাইল ফোন অপারেটরদের পাঠানো হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, ২০১৫ সালের বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন সিস্টেম সম্পর্কিত নির্দেশনা অনুযায়ী, ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে নিবন্ধন ছাড়া কোনো সিম ‘অ্যাক্টিভেশন, রি-অ্যাক্টিভেশন, ডি-অ্যাক্টিভেশন, প্রতিস্থাপন বা মালিকানা পরিবর্তন’ করা যাবে না।
কোনো অবস্থাতেই ‘অসত্য বা মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে সিম বা রিম নিবন্ধন করা যাবে না এবং যথাযথ বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ছাড়া কোনো সিম বিক্রি করা যাবে না।
কারিগরি ত্রুটির কারণে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করা না গেলে গ্রাহককে প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ করে তারপরও তাকে নিষ্ক্রিয় সিম দেওয়া যাবে। পরে ‘যথাযথভাবে’ বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন শেষ করে ওই সিম বা রিমের অ্যাক্টিভেশন, রি-অ্যাক্টিভেশন, ডি- অ্যাক্টিভেশন, প্রতিস্থাপন বা মালিকানা পরিবর্তন করা যেতে পারে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
সেখানে বলা হয়, বায়োমেট্রিক ডিভাইসের মাধ্যমে সংগ্রহ করা তথ্য সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন প্ল্যাটফর্ম এবং অপারেটরের সিম বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন প্ল্যাটফর্ম ছাড়া অন্য কোনো ডিভাইস বা প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষণ করা যাবে না।
এ নির্দেশনার লঙ্ঘন হলে, বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের কোনো স্তরে আঙুলের ছাপ বা বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের পর তা সংরক্ষণ করা হলে অথবা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত তথ্যের অপব্যবহার হলে তার সকল দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট অপারেটরের উপর বর্তাবে বলে সতর্ক করেছে বিটিআরসি।
“এ নির্দেশনাবলী জারির পর থেকে বাজারে ডিস্ট্রিবিউশন হাউস, রিটেইলার অন্য যে কোন স্থানে নিবন্ধিত কিন্তু বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে বাছাইকৃত নয় অথবা নিবন্ধিত কিন্তু মিথ্যা বা ভুল বা অসত্য তথ্য দিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে যাচাইকৃত প্রতিটি সিমের জন্য সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটর বা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে পাঁচ হাজার টাকা হারে প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা হবে।”
বিটিআরসি বলছে, কোনো অবস্থাতেই প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম বা রিম ব্যবহার, বিতরণ, পরিবেশন, কেনা-বেচা বা বিক্রির জন্য প্রদর্শন করা যাবে না।
এছাড়া অবৈধ ভিওআইপি কল আদান-প্রদানে ব্যবহৃত প্রতিটি সিমের জন্যও সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হবে বলে জানানো হয়েছে চিঠিতে।
পাশাপাশি সেসব সিম বা রিমের মাধ্যমে যে ভিওআইপি কল করা হয়েছে, তার ওপর প্রযোজ্য সব ধরনের রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরকে।
জরিমানার টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধে ব্যর্থ হলে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধান অনুযায়ী অপারেটরের লাইসেন্স বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে বিটিআরসি।
বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে চারটি অপারেটরের ১৫ কোটি ৮৪ লাখ সিম এখন গ্রাহকের হাতে আছে।
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের নিয়ম হওয়ার পর এখন আর আঙুলের ছাপ না দিয়ে নতুন সিম কেনা বা আগে থেকেই নিবন্ধিত বা চালু সিম বাজারে পাওয়ার কথা নয়। তারপরও জালিয়াতির মাধ্যমে নিবন্ধিত এবং অনিবন্ধিত চালু সিম উদ্ধারের ঘটনা বিভিন্ন সময়ে ঘটেছে। সেসব ঘটনায় বিভিন্ন অপারেটরের কর্মীদেরও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ ধরনের সিম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধমূলক বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর খবরও বিভিন্ন সময়ে এসেছে। আবার বিটিআরসির অভিযানে বিভিন্ন সময়ে বিপুল সংখ্যক সিম জব্দ করা হয়েছে, যেগুলো অবৈধ ভিওআইপি কল টার্মিনেশনে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।
সূত্রঃ বিডিনিউজ