মকবুল লাভ ম্যারেজ করেছে।ভালোবাসার বিয়ে।বউ খুব আদর,যত্ন করে।কিন্তু,সমস্যা হচ্ছে,ঈদ এলেই মকবুলের বউ ভয়ানক হিংস্র হয়ে যায়।সবসময় টাইগারের ভাব নিয়ে চলাফেরা করে।গত বছর মকবুলের বউয়ের ঈদের শফিং করতে দু-সপ্তাহ লেগেছিল।শেষের দিন বাজেটে অল্প ঘাটতি পড়েছিল।তাই বউয়ের সে কী এ্যাকশান!
মকবুল,এবার ভাল মত প্রস্ততি নিয়েছে।গতবছরের তুলনায় কিছু টাকা কম পড়েছিল শফিংয়ের।তাই,বন্ধূ কামালের কাছ থেকে অগ্রিম ধার নিয়ে রেখেছে।এবার কোন ধরণের ঝুঁকি নিতে চাইনা সে।
-আজ এত লেট হলো কেন?
:-অফিসের কাজে ব্যস্ত ছিলাম।তুমি শফিংয়ে যাবেনা?তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও।বিশ্বাস কর,ইচ্ছে করে দেরি করিনি।কাজের এত্ত চাপ!
-আরে,ওসব চিন্তা ছাড় তো।চা খাবে?তুমি ফ্রেশ হও।আমি তোমার জন্য চা আনছি।
:-জানো,তুমি কী রাগ করেছ?
-কেন শুধু,শুধু রাগ করব?
:-না,ইয়ে মানে শফিং করতে যাবেনা?
-না,যাবনা।তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও তো আগে।
মকবুল খুব অভাক হল।বউ এসব বলে কী? হঠাৎ এত্ত চেন্জ কীভাবে?পাগল হয়ে যায়নি তো? মকবুলের পাঁচ বছরের ছেলে আবুল এল।
-আবুল,শফিংয়ে যাবে না?
:-না,বাবা।
-কেন?ঈদের শফিং করবেনা?
:-না,বাবা।গত বছরের টা এখনো নতুন।
-তাতে কী।নতুন নিবেনা?
:-আব্বু,মনে করো নিয়েছি।
মকবুলের সব উল্টা পাল্টা মনে হচ্ছে।সে রান্না ঘরে গেল।
-এই তুমি শফিং করবেনা?
:-বললাম না,ওসব বাদ দাও।
-কেন?
:-কত কাপড় নতুন থেকে গেছে।আরো কেন কিনতে হচ্ছে?
-কিনলে কী এমন হত?
:-ধরে নাও কিনেছি।
মকবুল ভাবছে,এরা এসব বলে কী?হঠাৎ সবাই,এত ভালো হয়ে গেল?কেউ জাদুটোনা করেনি তো?নাকি সব কিছু স্বপ্ন?
হঠাৎ,মাইকের মত একটি বিকট শব্দে মুকবুল সম্ভিৎ ফিরে পেল।তার বউয়ের হুঙ্কার।সে বুঝতে পারল এতক্ষণ সে আসলেই ঘোরের মধ্যে ছিল।
-কী হল,ঘুমিয়ে গেলে নাকি? চোখ বন্ধ করে আছ কেন?টাকা দাও।
মকবুল কে এবার ছোট করে ধাক্কা দিল তার বউ!
:-হুম হুম..দিচ্ছি।
-একটু শফিংয়ে আসছি,সেখানেও ঘুমিয়ে গেলে?
:-আমি ঘুমাচ্ছিলাম? কই না তো।আচ্ছা,আমি এখানে কীভাবে আসলাম? তুমি চা বানাতে গিয়েছিলে না?
-কীসের চা?শফিংয়ের প্রথম সপ্তাহেই তোমার আলসেমি শুরু?এত অবহেলা?দুপুরে বারোটাই এলাম মাত্র।এখনো রাত বারোটা বাজতে দশ মিনিট আছে।আসলে সত্যি কথা হচ্ছে,তুমি আমাকে একটু ও ভালবাসনা!
মকবুল বুঝতে পারল সে ঘোরের মধ্যে ছিল।যে ঘোরটা শুধু প্রেমে পরলে বা বউকে নিয়ে শফিংয়ে আসলে হয়।
ইশ,ঘোরটা যদি আসলেই সত্যি হত!