অনলাইন ডেস্কঃ
ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় আমরা যা পাব, সম্পূর্ণ বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ প্রতিবেদন দাখিল করব বলে জানিয়েছেন পুলিশের ডিআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড প্ল্যানিং) এসএম রুহুল আমিন। বুধবার বিকেলে সোনাগাজী ফাজিল মাদরাসার ঘটনাস্থল সাইক্লোন শেল্টার পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
ডিআইজি রুহুল আমিন বলেন, আমরা নিহত রাফির বাবা-মা, শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত কথা বলব। যেহেতু এ মামলা নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন কাজ করছে তারা প্রতিনিয়তই মামলার অগ্রগতি নিয়ে কথা বলছেন, সেহেতু আমরা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। আমরা মাত্র কাজ শুরু করলাম। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলব আমরা।
ডিআইজি আরও বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডের আগে-পরে পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কিনা বা এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কি করা উচিত তা তদন্ত ও অনুসন্ধান করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পুলিশ সুপারের সঙ্গে থাকা পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরছান্দিয়া গ্রামের নুসরাত জাহান রাফির বাড়িতে তার বাবা এসএস মুছা মানিক, মা শিরিন আক্তার, বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ও ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান ও দুই সহপাঠীকে মাদরাসায় নিয়ে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশের ডিআইজি এসএম রুহুল আমিন, একই দফতরের এডিশনাল এসপি সম্রাট মো. আবু সুফিয়ান, পুলিশ পরিদর্শক মো. সালাহ উদ্দিন আরশেদসহ আরও দুই শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তার প্রতিনিধি, সোনগাজী-দাগনভূঞা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ও সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি কামাল হোসেন প্রমুখ।
আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ-দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরিফুল ইসলাম ওরফে শরিফ ও হাফেজ আবদুল কাদের।
এর আগে রোববার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করেছে পিবিআই।
টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে নুসরাতকে দাফন করা হয়।
সূত্রঃ জাগোনিউজ