অনলাইন ডেস্কঃ
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের পর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হাফেজ আবদুল কাদেরকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর মিরপুর এলাকার ৬০ ফিট এলাকা সংলগ্ন ছাপড়া মসজিদের পাশে আবদুল কাদেরের বড় ভাই রহিমের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। একই সঙ্গে বুধবার বিকেলে হাফেজ আবদুল কাদেরের মামা মাহবুবুল আলম গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মাহবুবুল আলম বলেন, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর মিরপুর এলাকার ৬০ ফিট এলাকা সংলগ্ন ছাপড়া মসজিদের পাশের বড় ভাই রহিমের বাসা থেকে আবদুল কাদেরকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।
গ্রেফতার আবদুল কাদের সোনাগাজী আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সফরপুর গ্রামের মনছুর খান পাঠান বাড়ির আবুল কাসেমের ছেলে। তার বাবা সাহেবের হাটের চা দোকানি। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে হাফেজ আবদুল কাদের পঞ্চম। তিনি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক এবং ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার অনুগত হিসেবে মাদরাসার হোস্টেলে থাকতেন আবদুল কাদের।
তবে নুসরাতের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, আমরা এখনো এ ব্যাপারে তথ্য পাইনি। সারাদেশে এ হত্যাকাণ্ডের আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পিবিআইয়ের অনেকগুলো টিম কাজ করছে। পিবিআইয়ের কোন টিম আবদুল কাদেরকে গ্রেফতার করেছে তা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি আমরা।
আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ-দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরিফুল ইসলাম ওরফে শরিফ ও হাফেজ আবদুল কাদের।
এর আগে রোববার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করেছে পিবিআই।
এর আগে টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে নুসরাতকে দাফন করা হয়।