আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ইকুয়েডর-যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সিভিল লিবার্টিজ অর্গানাইজেশনগুলোর নেটওয়ার্ক-আইএনসিএলও এর ১৩টি সদস্য সংগঠন। ১৫ এপ্রিল (সোমবার) এক যুক্ত বিবৃতিতে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের আশঙ্কার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তেমনটা হলে তার মানবাধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে এবং তিনি নিপীড়িত হতে পারেন। অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দায়েরকৃত মামলাকে মৌলিক সাংবাদিকতার পরিপন্থী আখ্যা দিয়েছে তারা।
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ইকুয়েডর-যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সিভিল লিবার্টিজ অর্গানাইজেশনগুলোর নেটওয়ার্ক-আইএনসিএলও এর ১৩টি সদস্য সংগঠন। ১৫ এপ্রিল (সোমবার) এক যুক্ত বিবৃতিতে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের আশঙ্কার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তেমনটা হলে তার মানবাধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে এবং তিনি নিপীড়িত হতে পারেন। অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দায়েরকৃত মামলাকে মৌলিক সাংবাদিকতার পরিপন্থী আখ্যা দিয়েছে তারা।
২০১২ সালের জুন থেকে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ৪ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) উইকিলিকসের টুইটে বলা হয়, ইকুয়েডর সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দুইটি সূত্র থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছে যে কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিনের মধ্যে অ্যাসাঞ্জকে দূতাবাস থেকে তাড়ানো হতে পারে। সেই ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) তাকে ব্রিটিশ পুলিশের হাতে তুলে দেয় ইকুয়েডর। তারা জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যার্পণের অনুরোধ সাপেক্ষেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
১৩ সংগঠনের যুক্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক অব সিভিল লিবার্টিজ অর্গানাইজেশনের (আইএনসিএলও) এর নিম্ন স্বাক্ষরকারী সংগঠনগুলো গত ১১ এপ্রিল যুক্তরাজ্য পুলিশের হাতে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ গ্রেফতার ও আটক হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানাচ্ছে। কোনও ধরনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিয়ে এবং কোনও অর্থপূর্ণ শুনানি ছাড়াই ইকুয়েডর তার রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করেছে এবং এর পরপরই অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা হয়। এতে মানবাধিকার প্রশ্নে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করার ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে, সেখানে তার নির্জন কারাবাস হতে পারে, যার পরিণতি হবে নির্যাতন, নিষ্ঠুরতা, অমানবিকতা, দুর্ব্যবহার ও সাজা। নিপীড়নের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় আশ্রয় চাওয়া মানুষকে সুরক্ষার প্রশ্নে এটি আন্তর্জাতিকভাবে নেতিবাচক নজির সৃষ্টি করেছে।’
অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যে নতুন করে আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, তা জানা গিয়েছিল সেই গত বছর ডিসেম্বরেই। ২০১৮ সালের নভেম্বরে ভার্জিনিয়ার আলেকজান্দ্রিয়া জেলা আদালতে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অভিযোগ গঠনের নথি ভুল করে ফাঁস করে ফেলেন প্রসিকিউটররা। অ্যাসাঞ্জ গ্রেফতারের পর আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। জানা যায়, নতুন অভিযোগটি আনা হয়েছে দুইটি ধারায়। একটি হলো ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ বা প্রতারণা’ সংক্রান্ত ধারা, অপরটি কম্পিউটার জালিয়াতির মাধ্যমে ষড়যন্ত্র’ বিষয়ক ধারা ১০৩০। দায়েরকৃত অভিযোগকে মৌলিক সাংবাদিকতার ওপর আক্রমণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। বলা হয়েছে, এতে অনুসন্ধান, তথ্য সংগ্রহ, সূত্রের পরিচয় গোপন রাখা, রিপোর্টারকে সুরক্ষা দেওয়া এবং জনস্বার্থে তথ্য প্রকাশ করার মতো বিষয়গুলো আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সংগঠনগুলো হলো: এগোরা ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস গ্রুপ (রাশিয়া), আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ, অ্যাসোসিয়েশন অব সিভিল রাইটস ইন ইসরায়েল (এসিআরআই), কানাডিয়ান সিভিল লিবার্টিজ অ্যাসোসিয়েশন (সিসিএলএ), সেন্ট্রো দে এস্তোদিওস লিগালেস ওয়াই সোসিয়ালেস (সিইএলএস, আর্জেন্টিনা), দিজুস্তিসিয়া (কলম্বিয়া), ইজিপ্টিয়ান ইনিশিয়েটিভ ফর পার্সোনাল রাইটস (ইআইপিআর), হিউম্যান রাইটস ল নেটওয়ার্ক (এইচআরএলএন, ভারত), হাঙ্গেরিয়ান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এইচসিএলইউ), আইরিশ কাউন্সিল ফর সিভিল লিবার্টিজ (আইসিসিএল), কেনিয়া হিউম্যান রাইটস কমিশন (কেএইচআরসি), লিগ্যাল রিসোর্সেস সেন্টার (এলআরসি, দক্ষিণ আফ্রিকা), লিবার্টি (যুক্তরাজ্য)। তাদের বিবৃতিতে স্বচ্ছতা, স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং সর্বোপরি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্য ফাঁসকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়েছে।
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন