কক্সবাজার প্রতিনিধি:
এবার ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসবেন বলে আশা করছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে শহরের চার শতাধিক আবাসিক হোটেল ও রেস্ট হাউসের প্রায় সব কক্ষই আগাম বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকদের এমন আগমনী বার্তায় উৎফুল্ল পর্যটন ব্যবসায়ীরা এখন শুরু করেছেন প্রস্তুতি। আশা করা হচ্ছে, এবারের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ৯ দিনের সরকা.ির ছুটিতে ৫ লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসবেন। পর্যটকদের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে টেকনাফ–সেন্টমার্টিন জলপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলও করবে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, প্রতিবছর দুই ঈদ, থার্টি ফার্স্ট ও পূজার ছুটিতে লক্ষ লক্ষ পর্যটক বেড়াতে আসেন দেশের প্রধান অবকাশ যাপন কেন্দ্র কক্সবাজারে। এখনও শীতকালীন পর্যটন মৌসুম শুরু না হলেও কেবল ঈদের টানা ছুটি পেয়ে ভ্রমণেচ্ছু লক্ষ লক্ষ মানুষ কক্সবাজারে বেড়াতে আসার আশা করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারের ঈদের ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসবেন। ইতোমধ্যে ভ্রমণেচ্ছু পর্যটকেরা হোটেল–মোটেলে আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছেন। ঈদের পরদিন থেকে এসব পর্যটক কক্সবাজারে ভিড় জমাতে শুরু করবেন। এই ভিড় থাকবে টানা এক সপ্তাহ পর্যন্ত। এরপর আরো সপ্তাহখানেক পর্যটকদের ঢল থাকবে বলে আশা করছেন হোটেল মালিকরা।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদারের মতে, এবারের ঈদের ছুটিতে ৫ লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে আসবেন। ইতোমধ্যে ঈদের পরদিন থেকে টানা প্রায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত শহরের চার শতাধিক হোটেল–মোটেলের প্রায় সব কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। হোটেলে কক্ষ না পেয়ে অনেকেই ফ্ল্যাটবাড়ি ভাড়া নিচ্ছেন। কেউবা শহরের বাইরে থাকার ব্যবস্থা করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আসবেন বলে আশা করছেন হোটেল মালিকরা।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান জানান, পর্যটকদের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে টেকনাফ–সেন্টমার্টিন জলপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলও শুরু করবে ঈদের পরদিন থেকে। যতদিন পর্যাপ্ত পর্যটক থাকবেন, ততদিনই এসব জাহাজ চলাচলও করবে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের ছুটিতে লাখ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসবেন এমন আশায় হোটেল মালিকরা এখন প্রহর গুণছেন। তাদের পাশাপাশি রেস্তোরাঁ ও ডিপার্টমেন্ট স্টোরের মালিকেরাও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এখন চলছে হোটেল–মোটেলসহ অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে সাজগোজের পালা। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রহণ করছে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি। শহরের ৩টি বীচ পয়েন্টে পর্যটকদের ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী জানান, ইতোমধ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশে লোকবল বাড়ানো হয়েছে। জেলার পর্যটনের দর্শনীয় স্থান বিশেষ করে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, পাথুরে বীচ ইনানী, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, রামুর বৌদ্ধ বিহার ও মন্দির, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া নতুন করে টেকনাফ ও ইনানীতে ট্যুরিস্ট পুলিশের ক্যাম্পও খোলা হয়েছে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ জানান, ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশের সমন্বয়ে নি্নিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আনোয়ারুল নাসের জানান, ঈদের ছুটিতে বেড়াতে এসে কোন পর্যটক যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতও সক্রিয় থাকবে।
[আজাদী]