হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
নাইক্ষ্যংছড়িতে দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা মংশৈনু মার্মার হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা করেছে নিহতের ছেলে উচুথোয়াই। আজ শুক্রবার অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে তিনি হত্যা মামলাটি দায়ের করেন বলে আমাদের রামু ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আবুল খায়ের।
অন্যদিকে এ হত্যার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামি স্টেট (আইএস)। একই সাথে ঝিনাইদহে সেবায়েত শ্যামানন্দ দাসকে কুপিয়ে হত্যার দায়ও স্বীকার করেছে আইএস। শুক্রবার বিকেলে অইএস তাদের নিউজ ফিড আমাক নিউজ-এ হত্যার এ দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে।
এদিকে অভিযান চালিয়েও পুলিশ বাইশারীতে খুন হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা মংশৈনু মার্মার হত্যাকারীদের ধরতে পারেনি। শুক্রবারও অভিযান চালানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বাইশারী বাজার থেকে ধাবনখালী মার্মা পাড়ায় নিজ বাসায় যাওয়ার সময় ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মংশৈনু মার্মাকে (৫৫) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তাকে পেছন দিক থেকে ধারালো অন্ত্র দিয়ে কোপানো হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের কাছাকাছি শ্মসান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকালে বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর বিকেলে বাইশারীতে সৎকার কাজ সম্পন্ন হয়। আওয়ামীলীগের এ নেতা হত্যার ঘটনায় বাইশারীতে শুক্রবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। এছাড়াও ঘুমধুম ইউনিয়ন সহ নানা স্থানে প্রতিবাদ সভা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে রাতব্যাপী অভিযান চালায়। তবে হত্যার ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকে গ্রেফতার বা আটক করতে পারেনি পুলিশ। হত্যার ঘটনার সুনির্দিষ্ট কোনো ক্লু বের করা না গেলেও পুলিশ বলছে, জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। পরিবারের লোকজনদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ এ কথা জানিয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জানান নিহত মংশৈনু মার্মার ভাই উথুইহ্লা মার্মা জানিয়েছেন, পাশের সাধুঅং পাড়ার লোকজনদের সাথে তার ভাইয়ের জায়গা জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এ জের ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে নিহতের পরিবারের লোকজন মনে করছেন।
এদিকে বৌদ্ধ ভিক্ষু মংশৈউ চাক হত্যার মাত্র দেড় মাসের মাথায় বাইশারীতে একই কায়দায় আওয়ামী লীগ নেতার খুন হওয়ার ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। উপর চাকপাড়ার বৌদ্ধ ভিক্ষুকেও একইভাবে দুর্বৃত্তরা মাথার পেছন দিক থেকে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনারও পুলিশ হত্যার রহস্য এখনো উদ্ঘাটন করতে পারেনি