স্পোর্টস ডেস্ক:
শেষ পর্যন্ত মাঠে না থাকলেও স্বপ্নপূরণ হলো ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর। ফ্রান্সকে একমাত্র গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরোর শিরোপা জিতেছে পর্তুগাল।
সাঁ-দেনিতে ফাইনালে প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময়ে চোখের জলে মাঠ ছেড়েছিলেন চোটে পড়া রোনালদো। সতীর্থরা হতাশ করেনি অধিনায়ককে। অতিরিক্ত সময়ে এদেরের চমৎকার গোলে স্বাগতিকদের হতাশ করে দশম দেশ হিসেবে ইউরোর শিরোপা জিতে নেয় ফের্নান্দো সান্তোসের দল।
ফাইনালের দ্বিতীয়ার্ধ আর অতিরিক্ত সময়ের উত্তেজনার কমতি ছিল না; কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের হতাশ করেছে প্রথমার্ধের খেলা। রোববার রাতে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে প্রথম ভালো সুযোগটা পেয়েছিলেন নানি। ডি-বক্সে বুক দিয়ে বল নামিয়ে এই ফরোয়ার্ডের নেওয়া শট চলে যায় পোস্টের উপর দিয়ে।
নবম মিনিটে অঁতোয়ান গ্রিজমানের হেড দারুণ দক্ষতায় কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান পর্তুগিজ গোলরক্ষক রুই পাত্রিসিও।
এর দুই মিনিট আগে দিমিত্রি পায়েতের সঙ্গে সংঘর্ষে ব্যথা পেয়েছিলেন রোনালদো। এরপর দুইবার চোটের পরিচর্যায় মাঠের বাইরে গিয়ে ফিরলেও বোঝা যাচ্ছিল, এভাবে বেশিক্ষণ থাকতে পারবেন না। শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ছুড়ে ফেলে নিজেই ইঙ্গিত করলেন মাঠ থেকে তুলে নেওয়ার। ২৫তম মিনিটে হেঁটেও বের হতে পারলেন না; স্ট্রেচারে শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়তে হলো রিয়াল মাদ্রিদের এই ফরোয়ার্ডকে।
নিষ্প্রাণ প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে উত্তেজনা ফেরে ফাইনালে। ৬৫তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে কিংসলে কোমানের ক্রসে দুর্দান্ত হেড করেছিলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা গ্রিজমান। পাত্রিসিও হাল ছেড়েও দিয়েছিলেন; কিন্তু বল একটুর জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়।
১০ মিনিট পর খুব কাছ থেকে অলিভিয়ে জিরুদের শট ঠেকিয়ে দেন পাত্রিসিও। ৮০তম মিনিটে নানির ক্রস জালে প্রায় ঢুকে যাচ্ছিল। কিন্তু তৎপর ছিলেন গোলরক্ষক উগো লরিস।
চার মিনিট পর মুসা সিসোকোর দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে আবারও পর্তুগালের রক্ষাকর্তা পাত্রিসিও। তবে যোগ করা সময়ে পরাস্ত হয়েছিলেন তিনি। ভাগ্য ভালো পর্তুগালের; জিরুদের বদলি হিসেবে নামা অঁদ্রে-পিয়েরে জিনিয়াকের শট কাছের পোস্টে লেগে ফিরে। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
ইউরোর ফাইনালের ইতিহাসে এই প্রথম নির্ধারিত ৯০ মিনিটে কোনো গোল হয়নি।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ দিকে এদেরের হেড ঠেকিয়ে দেন অধিনায়ক লরিস।
১০৮তম মিনিটে পরাস্ত হয়েছিলেন লরিস। তবে রাফায়েল গেররেইরোর ফ্রি-কিক ক্রসবারে লাগে। তবে পরের মিনিটেই আসে জয়সূচক গোলটি। বদলি হিসেবে নামা এদেরের প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া আচমকা নিচু শট ঝাঁপিয়ে পড়েও ঠেকাতে পারেননি লরিস। প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে এটাই এদেরের প্রথম গোল!
২০০৪ সালে গ্রিসের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল স্বাগতিক পর্তুগাল। সেবার পরাজিত দলে ছিলেন রোনালদো। ক্যারিয়ারে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম কোনো শিরোপার অপেক্ষা ঘুচলো তার ১২ বছর পর।