গিয়াস উদ্দিন ভুলু , টেকনাফ:
দীর্ঘ এক মাস ধরে মিয়ানমার থেকে আসছে না গরু। এতে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ করিডোরের স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীরা পড়েছে বিপাকে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। কারণ দীর্ঘ দিন থেকে বৈরী আবহাওয়া, লাগাতার বৃষ্টি, সাগর উত্তালসহ গরু ব্যবসায়ীদের নানান সমস্যার কারণে আমদানী হচ্ছে না বলে খবর পাওয়া গেছে।
শাহপরীর দ্বীপ করিডোরের পশু ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, ইদানিং মিয়ানমারের গরুর দাম বেশ চড়া, আবার মিয়ানমারের পশু ব্যবসায়ীরা করিডোরের গরু নিয়ে আসার পর তাদের নিজের ইচ্ছা মত দাম বেশি চাওয়ার কারণে সে দাম দিয়ে বিক্রি করে আমাদের কোন মুনাফা না হওয়ায় আমরা আপাতত গরু আমদানী বন্ধ করে দিয়েছি।
তারা আরো জানান, বর্তমানের বৈরী আবহাওয়ার পরিস্থিতির একটু ভাল হয়ে আসলে আমরা মিয়ানমার থেকে পুনরায় গরু আমদানী করে ব্যবসা চালিয়ে যাব।
এদিকে দীর্ঘ দিন ধরে মিয়ানমার থেকে গরু না আসার কারণে স্থানীয় বাজারের মাংস ব্যবসায়ীরা সু-কৌশলে মহিষের মাংসকে গরুর মাংস বলে অবাধে বিক্রি করে যাচ্ছে। বর্তমানে টেকনাফ বাজারে গরুর মাংস নেই বললে চলে।
এব্যাপারে শাহপরীর দ্বীপ করিডোর ব্যবসায়ীর সভাপতি মো. হাসেম বলেন, বর্তমান বাজারে মিয়ানমারের গরুর দাম আগের চেয়ে একটু বেশি হওয়ায় তার পাশাপাশি দীর্ঘ থেকে লাগাতার বৃষ্টি, সাগর উত্তাল ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে মিয়ানমার থেকে আপাতত গরু আমদানী করছেনা ব্যবসায়ীরা। কারণ এই গরু গুলো আমদানী করা হয় মিয়ানমারের আকিয়াব, মেয়ং, টংগু থেকে। এই সমস্ত এলাকা থেকে গরু গুলো শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে আসতে সময় লাগে ৩-৪ দিন। তাই মিয়ানমার ও বাংলাদেশের পশু ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি নিয়ে আমদানী আপাতত বন্ধ রেখেছে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি ভাল হলে পশু আমদানী পুনরায় চালু করা হবে।
তিনি আরো জানান, মিয়ানমার থেকে আপাতত গরু না আসলেও বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের মংডুসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে মহিষ।
নাম প্রকাশে অনিশ্চুক শাহপরীর দ্বীপ করিডোরের বেশ কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী জানান, শাহপরীর দ্বীপ করিডোরের গরু ব্যবসায়ী ও সাবরাং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ শরীফ (প্রকাশ শরীফ বলি) হচ্ছে করিডোরের শীর্ষ গরু ব্যবসায়ী সে প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে ১০০ থেকে ১৫০ গরু আমদানী করত।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায় শরীফ বলি মিয়ানমারের গরু ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশী ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সে টাকা যথা সময়ে পরিশোধ না করায় মিয়ানমারের পশু ব্যবসায়ীরা রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে।
এব্যাপারে টেকনাফের অন্যন্যা পশু ব্যবসায়ীরা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, একজন প্রভাবশালী গরু ব্যবসায়ী টাকা লেনদেন খারাপ করার কারণে মিয়ামারের পশু ব্যবসায়ীরা এখন সহজে কাউকে বিশ্বাস করেনা। এতে আমরা ছোট খাটো ব্যবসায়ীরা পড়েছি বিপাকে। কারণ আমাদের লক্ষ লক্ষ টাকা মিয়ানমারের পশু ব্যবসায়ীদের কাছে আটকা পড়েছে।
এব্যাপারে গরু ব্যবসায়ী ও ইউপি সদস্য মোহাম্মদ শরীফ বলির কাছে জানতে চাইলে ৬ কোটি টাকা লেনদেন এর কথা স্বীকার করে বলেন, মিয়ানমারের পশু ব্যবসায়ীদের সাথে টাকা লেনদেনের সাময়িক সমস্যা হলেও অল্প কয়েক দিনের মধ্যে আস্তে আস্তে তাদের টাকা পরিশোধ করা হবে এবং আমাদের গরু আমদানীও পুনরায় চালু হবে।