প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষুঃ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একুশে পদকে ভূষিত, বাংলাদেশী বৌদ্ধদের তৃতীয় সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু, বৌদ্ধ ধর্মীয় বহুগ্রন্থের অনুবাদক, বিনয়াচার্য, আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান সংঘপুরোধা, বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার প্রাক্তন সভাপতি, মাননীয় উপসংঘরাজ, রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারের পূজনীয় অধ্যক্ষ প্রয়াত পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের’র শবদেহের পেটিকাবদ্ধ অনুষ্ঠান কাল।
কাল (৯ অক্টোবর) তাঁর দীর্ঘ ভিক্ষু জীবনের বহু স্মৃতি বিজড়িত সাধনপীঠ রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারে উক্ত অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
এই উপলক্ষে পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের’র শবদেহ পেটিকাবদ্ধ উদযাপন পরিষদ দিনব্যাপী কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ভোরে বুদ্ধপূজাদান, সকাল ৮টায় ধর্মীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১০টায় সংঘদান ও অষ্টপরিষ্কার দানসভা, দুপুর ১২টায় অতিথি ভোজন, দুপুর ২টায় পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের’র স্মরণে স্মৃতিচারণ ও অনিত্যসভা, বিকাল ৫টায় শবদেহের পেটিকাবদ্ধকরণ, সন্ধ্যা ৬টায় দেশ ও বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন উপ-সংঘরাজ ভদন্ত জ্ঞানশ্রী মহাথের, উপ-সংঘরাজ ভদন্ত ধর্মপ্রিয় মহাথের, উপ-সংঘরাজ ভদন্ত শীলরক্ষিত মহাথের প্রমূখ দেশবরেণ্য ভিক্ষুসংঘ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদূর উশৈসিং এমপি।
আরো উপস্থিত থাকবেন- স্থানীয় সাংসদ, সংরক্ষিত আসনের সাংসদ, সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, জেলা পরিষদ প্রশাসক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার, এডিএম মোঃ শাজাহান আলী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডাঃ উত্তম কুমার বড়ুয়া প্রমূখ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা বৃন্দ, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, নব্বই বছর বয়সী খ্যাতিমান বৌদ্ধ ভিক্ষু পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের বিগত কয়েক বছর সময় ধরে বার্ধক্যজনিকত রোগে ভুগছিলেন। ২০১২ সাল থেকে দফায় দফায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে দেয়া হয় উন্নত চিকিৎসা। খোদ প্রধানমন্ত্রী ও সড়ক, পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সত্যপ্রিয় মহাথের’র চিকিৎসার খোঁজখবর রাখতেন।
গত সেপ্টেম্বরে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। এমতাবস্থায় শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দিলে তাঁকে ২১ সেপ্টেম্বর সিসিউ (কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট) তে নেয়া হয়। অবস্থার খানিকটা উন্নতি হলে তাঁকে ২৮ সেপ্টেম্বর কেবিনে আনা হয়। অবস্থার পুণরায় অবনতি হলে কয়েক দিনের ব্যবধানে তাঁকে ৩ অক্টোবর আবারও সিসিউ তে নেয়া হয়। অবশেষে ৩ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে তিনি মহাপ্রয়াণ করেন। পরের দিন ৪ অক্টোবর তাঁর মরদেহ রামুতে নিয়ে আসা হয়।